[৩]

ভারতের আইপিএল বাংলাদেশে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে শুরু থেকেই। বাংলাদেশি খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান সেখানে নিয়মিত যোগ দেয়ায় আমাদের দেশের দর্শকদের আগ্রহ বেড়েছে বহুগুণে। তবে এই আগ্রহ যদি শুধুই ক্রিকেট নিয়ে হত, তাহলেও চলতো। তবে আমাদের অনেকেরই চোখের আড়ালে এই আইপিএল কিংবা টিটুয়েন্টি বিশ্বকাপ এখন ধুন্দুমার জুয়ার আসর। বড় বড় শহর থেকে শুরু করে মফস্বলগুলোতে পর্যন্ত পাড়ায় পাড়ায় এখন একটা টিভি নিয়ে ছোটখাটো আড্ডাখানা জমেছে, যেখানে উড়ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এইসব জুয়া শুধু যে ম্যাচ কে জিতবে, তার উপরে ভিত্তি করে হয় তাই নয়। বরং কোন বলে কোন শট হবে, কোন ওভারে কত রান আসবে, কোন খেলোয়াড় কত রান তুলবে, এই ধরণের ছোট ছোট স্পট জুয়ার বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে টাকা আর টাকা।

এইসব জুয়ার আসরে যদি প্রফেশনাল জুয়াড়িরাই টাল মাটাল হচ্ছেন যদি মনে করেন, তবে ভুল করবেন। এলাকার স্কুল পড়ুয়া ছেলে থেকে শুরু করে বেকার যুবকটি পর্যন্ত এসব জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছে টাকার লোভে।

তবে যুগ এখন ডিজিটাল আন্দোলনের। যুগ এখন বিকেন্দ্রীকরণের। তাই একখানে বসে জুয়াড়িগিরি করতে এখন কেউ বাধ্য হয়না। যে যার বাসায় টিভির সামনে বসেই চিবুচ্ছে হাতের নখ আর ডিল হয়ে যাচ্ছে কড়া কড়া টাকার। ফোনে ফোনে চলছে জুয়ার ডাক। একদম কাছ থেকে দেখা এমনসব কিছুই ঘটছে আমাদের স্কুল কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেপেলেদের মাঝে। ১০০ টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরছে ম্যাচের ওপর। একটু চোখ কান খোলা রাখলেই তা টের পাওয়া যায়।

অথচ ১৫ বছর আগেও যখন এ দেশে ক্রিকেটপ্রেমীর অভাব ছিলনা, যখন ক্রিকেট ছিল কালে ভদ্রে একটা ম্যাচের খেলা, তাও যা শুনতে হত রেডিওতে, তখন এই ধরণের জুয়ার আসরের কথা কল্পনাও করা সম্ভব ছিলনা। এর একটা অন্যতম কারণ হল, ক্রিকেট তখন আমাদের অবসরের একটি বিনোদন মাধ্যম ছিল মাত্র, যার খবর নিতে কষ্ট করে রেডিও সিগন্যাল ধরতে হত। সিগন্যাল ঠিকমত না ধরলে বাদ, কাল পত্রিকায় পড়ে নেব নে।

কিন্তু এখনকার যুগে যেন ক্রিকেট বা অন্যান্য যে কোন স্পোর্টসই হয়েছে আমাদের মৌলিক চাহিদার বিষয়। খেলাধুলা দেখার ফাঁকে ফাঁকে এখন আমাদের অবসর খুঁজতে হয়। এর স্পষ্ট প্রমাণ হচ্ছে সংখ্যাতীত স্পোর্টস চ্যানেল। আগে মূলত দুইটি চ্যানেল থাকলেও, এখন প্রতিটি খেলার জন্য আলাদা আলাদা চ্যানেল তৈরি হয়েছে। গলফ, ক্রিকেট, ফুটবল ইত্যাদির জন্য ভিন্ন ভিন্ন ডেডিকেটেড চ্যানেল। যেখানে সারাক্ষণ হয় খেলা চলছে, নয়তো খেলার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। মার্কেটিং এর ভাষায় একে বলা হয় ক্রিয়েটিং ডিমান্ড। এক দশক আগেও কেউ ডেডিকেটেড খেলার চ্যানেল চেয়েছিল কিনা তা গবেষণার বিষয়। চিন্তার বিষয় হতে পারে কারো মাথায় এটাও এসেছিল কিনা যে শুধু গলফের জন্যে একটি আলাদা চ্যানেল হবে যেখানে দিনভর গলফ নিয়েই টক শো আর ডকুমেন্টারি হবে আর আমরাও তা দেখবো। অথচ স্যাটেলাইট চ্যানেল মালিকরা অত্যুৎসাহী ক্রীড়াপ্রেমীদের এই উৎসাহকে পুঁজি করে এইসব ধান্ধাবাজির আইডিয়া বের করেছেন, আর আমরাও তা সানন্দে ঢেঁকি গেলার ন্যায় গিলছি। এইভাবে চ্যানেলে চ্যানেলে বিভিন্ন খেলাধুলা সারা দেশের আনাচে কানাচে পৌঁছে সুগম করে দিয়েছে যাবতীয় অপব্যবহারের পথ। হালের চায়না মোবাইলে তো এখন হাতের মুঠোয় টেলিভিশন। খেলা না দেখে মুক্তি কই?

তবে সবচে অদ্ভুত ব্যাপার হল, এই বিষয়গুলো আমাদের কাছে এখনো অদ্ভুত লাগছেনা।

[৪]

আধুনিক সমাজে খেলাধুলাকে যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, খেলাধুলার মৌলিক উদ্দেশ্য কখনই তা ছিলনা। খেলাধুলা একটাসময় ছিল শরীরচর্চার মাধ্যম। বর্তমানে তা হয়েছে বিস্তর ব্যবসার পুঁজি। ঠিক মত দেখে শুনে ইনভেস্ট করতে পারলেই কেল্লা ফতে।

যে কোন বিবেকবান মানুষই যদি তার নিজের প্রজ্ঞা দিয়ে বিচার করেন, তবে তার সামনে এটাই স্পষ্ট হবে, যে খেলাধুলাকে ‘টিভি শো’ বানিয়ে ফেলা নিছকই ব্যবসায়িক চাতুরী এবং তা অবশ্যই মানুষের মূল্যবান সময়ের অপচয়কারী। আমরা কেউ-ই হয়তো নিজেদের প্রশ্ন করিনা, যে কেন একটা সময় মানুষ অন্যান্য কাজের অবসরে খেলা দেখতে চাইতো আর এখন খেলার দেখার ফাঁকে অবসর পেলে অন্যান্য কাজ করতে চায়। খুব কম মানুষই আছেন, যারা ব্যস্ততার ফাঁকেও একে ওকে জিজ্ঞাসা করে বেড়ান না, ‘স্কোর কত হল?’ এভাবে গেম কে গেম-শো বানিয়ে ফেলার ফলে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ‘খেলা দেখা’ হয়ে উঠেছে অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশ্বকাপ ক্রিকেট বা ফুটবলের ফাইনাল চললে এমন অনেক স্কুল কলেজ আছে, যেখানে ছুটির দাবি করা হয় আর দাবি অনুমোদিতও হয়। ঠিক কেন এই ধরনের গেম-শো আমাদের প্রোডাক্টিভ কাজের মাঝে বাগড়া দেয়া শুরু করল, তা খুঁজতে গেলেও এই ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণটি বোঝা জরুরী।

কোন স্পোর্টস টুর্নামেন্ট দেখলেই বোঝা যায় কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড যারা চালায়, তাদের মগজ কেন আমাদের চাইতে বেশি দৌড়োয়। আমরা যাকে শুধুই খেলা মনে করছি, তারা তাকে সোনার ডিম পাড়া হাঁসের মতই দেখছে। স্টেডিয়ামের গেট থেকে শুরু করে টিভি স্ক্রিনের চতুর্দিক—কোনটাই বাদ নেই বিপণনের মাধ্যম হিসেবে যা বিবেচ্য হয়নি। বিশ্বের নামীদামী কোম্পানিগুলো কখনই অদম্য ক্রীড়াপ্রীতি থেকে এইসব শোতে স্পন্সর করেনা। তারা তখনই করে, যখন দেখা যায় কোন নির্দিষ্ট খেলা আর খেলা নেই, ম্যানিয়াকদের নেশায় পরিণত হয়েছে।

যারা আদতেই চিন্তাশীল, তারা অনায়াসেই দেখতে পাবেন কিভাবে ‘হাতের মুঠোয় বিশ্ব’—এই বিশেষণে বিশেষায়িত টেলিভিশান ব্যবস্থা মানুষের কর্মক্ষমতা হ্রাসকরণের তুষের আগুনে ফুঁ দিচ্ছে। যে খেলা আমি দেখতাম না, সেটাই দেখে সময় কাটানোর ‘সুযোগ তৈরি’ করে দিচ্ছে টেলিভিশান। অন্যভাবে বলা চলে, ‘অবসরে’ ‘খানিকটা’ খেলা দেখতে দেখতেই শেষে তা নিয়মিত দেখার নিয়ম তৈরি হয়। যে টুর্নামেন্টের শিডিউলই হয়তো গতকাল পর্যন্ত জানতাম না, প্রথম দু-একটা ম্যাচ দেখে তার ফাইনাল অব্দি না দেখলে যেন শান্তিতে আর ঘুমুতেই পারা যায়না।

ঠিক এই ধরণের অস্বাভাবিক আচরণকেই পুঁজি করে ব্যবসা পেতেছে বিশাল পুঁজিবাদী গোষ্ঠী।

এর কুফলটা বুঝতে হলে পরিসংখ্যান ঘাঁটার মত পরিশ্রম করতে হয়না। আশেপাশে চোখ বুলালেই তা পরিষ্কার দেখা যায়। আমাদের নতুন প্রজন্মের শিশুরা প্রথমত খেলার জন্য উন্মুক্ত কোন জায়গা পায়না, আর দ্বিতীয়ত তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হয়েছে হয় ভিডিও গেম নয়তো টিভিতে বিভিন্ন খেলাধুলা, কার্টুন, মুভি নাটক ইত্যাদি। ফলে তারা এবং তাদের পিতামাতা বিকল্প ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল হয়ে প্রাথমিক যেই অভাব ছিল, তার দিকে আর নজর দিচ্ছেন না। ফলে আমাদের নতুন প্রজন্ম হয়ে উঠছে কম কর্মক্ষম আর স্থূলকায়। ১০০ মিটার দৌঁড়াতে দিলে হাপিয়ে যায় এমন ছেলে দিনরাত পড়ে থাকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ নিয়ে—এমন উদাহরণ বিরল নয়।

এর কারণটা আমাদের নিজেদেরকেই বের করতে হবে। আর বাস্তবতাকে স্বীকার করতে হবে। আমরা এমন একটা সময়ে এসে পৌঁছেছি, যখন ‘শারীরিক’ খেলাধুলাকে খুব যতটা এড়িয়ে যাওয়া হয়, ‘টেলিভাইসড’ খেলাধুলাকে ততবেশি আগ্রহের বস্তু করে উপস্থাপিত করা হয়। আমরা নিজেদের কথা যদি বাদও দিই, দেখা যাবে আমাদের শিশু, কিশোর কিংবা তরুণ, যারা স্বেচ্ছায় খেলাধুলা করতে চায়না, তাদের কখনো জোর করে ঠেলে বাড়ির উঠোনটায় কিংবা সামনের মাঠে পাঠাইনা। কিন্তু ঠিকই কথায় কথায় টিভি ছেড়ে তার সামনে বসিয়ে দিই।

চাইল্ড সাইকোলজি বোঝা জরুরী। আপনি যখন আপনার বাসায় নিয়মিত অমুক লীগ তমুক কাপ ইত্যাদি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন, তখন আপনার বাসার শিশুরা সেটাকে গুরুত্বের সাথেই নেবে। আর ততটাই স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে শারীরিক খেলাধুলাকে অপ্রয়োজনীয় মনে করবে, এর ব্যাপারে কোন আলোচনা না করে যতটা মূল্যহীন হিসেবে তা আপনি তার সামনে উপস্থিত করেন।

এভাবে এক পা দুই পা করে স্পোর্টস হয়ে ওঠে 'স্পোর্টস এন্টারটেইনমেন্ট।' কটা বিজ্ঞাপন দেখা যায় এসব স্পোর্টস চ্যানেলে, যেখানে সবাইকে উৎসাহিত করা হয়, যে ‘যান! বাইরে গিয়ে কিছু হলেও খেলে আসুন’? অথচ উল্টো চিত্রই যেন দ্রষ্টব্য। কতিপয় টুর্নামেন্টের বিজ্ঞাপনে বলা হয় “সারা বিশ্ব দম বন্ধ করে বসে আছে টিভি পর্দার সামনে! শুধুমাত্র অমুক কাপের জন্য!” ভারতের আইপিএল এর বিজ্ঞাপনেই বেশ কয়েকবার দেখানো হয়েছে মানুষ তাদের সবরকম কাম কাজ ফেলে বাসায় দৌড়াচ্ছে টিভির সামনে বসার জন্য।

প্রশ্ন হল কেন সারাবিশ্বের মানুষ সকল প্রোডাক্টিভ কাজ ফেলে ‘খেলা দেখার’ জন্যে দম বন্ধ করে বসে থাকবে? শুধুমাত্র কথিত এন্টারটেইনমেন্টে এন্টারটেইন্ড হতে কেন আমাদের খেলা দেখে মূল্যবান সময় বিসর্জন দিতে হবে? আমাদের সময় কতটা সস্তা হলে ঘন্টার পর ঘন্টা অন্যের ‘খেলা’ দেখে কাটানো সম্ভব?

বিশেষ করে আমাদের মত অনুন্নত (অনেকের দাবি উন্নয়নশীল) দেশের মানুষের এইধরণের খেলা দেখে সময় কাভার করার মত ‘বিলাসিতা’ করার যৌক্তিকতা কতটা শক্ত হতে পারে? একটা দেশের মেরুদন্ড ভেঙ্গে পড়ছে দিনের পর দিন, সে দেশের কর্মক্ষম জনতা বসে বসে টিভির সামনে হাত তালি দিচ্ছেন, ব্যাপারটা রসিকতার পর্যায়ে পড়ে কিনা, তা ভাবনার বিষয়।

খেলাধুলার এই প্রদর্শন বর্তমানে যে ভয়াবহ একটি অসুখের জন্ম দিয়েছে, তা হল অন্ধ জাতীয়তাবাদ। খেলাধুলার ব্যাপকতার ফলে এখন একটি দল যেন একটি দেশের প্রতিচ্ছবি। খেলার মাঠে মুখোমুখি দুটি দল যেন মুখোমুখি দুটি দেশ। খেলার মাঠে তারা যতটা না প্রতিযোগিতা আর প্রতিহিংসায় লিপ্ত, তার চাইতে বহুগুণ হিংসার অঙ্গারে জ্বলেন তাদের সমর্থকরা।

এটা স্বাভাবিক যে নিজের দেশের দলকে সমর্থন করতে গেলে কখনই অন্য দলটিকে সম্মান দেয়া আসেনা। আমাদের বাস্তবিক চিন্তাধারায় সামিল হতে হবে। আপনি কখনোই আপনার দেশের সাথে অন্য দেশের খেলায় নিরপেক্ষ হতে পারেন না। ফলে অপর দেশের দলকে নানাভাবে খাটো করে দেখা, সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোতে বিভিন্ন কটুক্তি আর কড়া মন্তব্য করা, ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা অন্ধ জাতীয়তাবাদের একটি প্রদর্শনী দেখতে পাই। এতে অবশ্যই সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব বিদ্যমান। বাংলাদেশের কেউ একজন পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে সমর্থন করলে, কিংবা কেউ ভারতীয় ক্রিকেট দলকে সমর্থন করলে, বন্ধুমহল কিংবা সোস্যাল নেটওয়ার্কে যেন তার মুখ দেখানো দায় হয়ে পড়ে। প্রশ্ন হল, কেন? যারা খেলাকে এন্টারটেইনমেন্ট বানিয়ে টিভি পর্দায় এনেছেন, তারা কি এই নিয়ম বেঁধে দিয়েছিলেন যে কে কোন দলকে সমর্থন দেবে? নাকি পিউর এন্টারটেইনমেন্টের জন্য যার যেই দল ভালো লাগে, তাকেই সমর্থন দেবে? অথচ বাস্তবতা একেবারেই উলটো। সেখানে আপনি যদি একজন দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য পাকিস্তান ও ভারত ক্রিকেট টীমকে সমর্থন করা নিষিদ্ধ। সমর্থন যদি ভুল করে দিয়েও ফেলেন, তবে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে লাঞ্ছনা।

জাতীয়তাবাদের এই বিষ অনেক দূর গড়িয়ে গেছে এইসব স্পোর্টস এন্টারটেইনমেন্টের ওপর ভর করে। ভারতে যখন পাকিস্তান খেলতে যায়, তখন গ্যালারিতে শোনা যায় “গালি গালি মে শোর হ্যাঁ, পাকিস্তান চোর হ্যাঁ” [গলি গলি তে উঠেছে শোর, পাকিস্তান হল চোর।] কিংবা পাকিস্তানের হোমগ্রাউন্ডে ভারত গেলেও একই অবস্থা। ভারতের নামে গালাগালি চলেই। অথচ এইসব খেলাধুলা নাকি ছিল পিউর এন্টারটেইনমেন্ট।

ঠিক এইভাবেই খেলাধুলার মত একটি শরীরচর্চাকে ব্যবসা ও এন্টারটেইনমেন্টে রূপ দিয়ে অন্ধ জাতীয়তাবাদের সুপ্ত আগুনে ছিটানো হচ্ছে তেল। আর সমর্থকরাও অজ্ঞাতসারে অন্ধ জাতীয়তাবাদের আবেগে এমন অদ্ভুত সব আচরণ করছেন, যা হয়তো এই এন্টারটেইনমেন্টের অস্তিত্ব না থাকলে তারা করতেন না। সত্যিই যদি এই ধরণের এন্টারটেইনমেন্টের নামে খেলাধুলা আমাদের গেলানো না হত, তাহলে হয়তো বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের আগে কেউ বলতো না, যে ৭১ এর মত আবার হারাতে চাই তাদের, কিংবা বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের আগেও শুনতে হত না যে, ফেলানী হত্যার প্রতিশোধ নেব আজ।

এসব কি নেহায়েতই মানসিক বৈকল্য নয়?