শিকওয়া [অভিযোগ]

ক্ষতিই কেন সইব বল? লাভের আশা রাখব না?
অতীত নিয়েই থাকব বসে- ভবিষ্যত কি ভাবব না?
চুপটি করে বোবার মতন শুনব কি গান বুলবুলির
ফুল কি আমি? ফুলের মতোই রইব নীরব নম্রশির?
কন্ঠে আমার অগ্নিবাণী-সেই সাহসেই আজকে ভাই
খোদার নামে করব নালিশ ! মুখে আমার পড়ুক ছাই!

তোমার সভায় কথা বলার নাইকো যাডএর যোগ্যতাই-
পাচ্ছে তারাও ধন-দৌলত! বেশ তো! তাতেও দু:খ নাই।
কিন্তু একি ! কাফিররা পায় এই ধারাতেই ‘হুর-কসুর,’
মুসলমানের বেলায় শুধুই ওয়াদা হুরের-স্বর্গপুর!
আফসোস আর আগের মতোন নওকো তুমি মেহেরবান,
ব্যাপারটা কি ? এখন কেন দাও না মোদের তেমন দান?

মুসলমানদের ভাগ্যে এমন দৈন্য কেন নামল হায়!
অসীম তোমার শক্তি-তুমি করতে পার মন যা চায়।
মরুর বুকে পার তুমি ফুল ফুটাতে বুদবুদের
মরিচীকাও হতে পারে স্নিগ্ধ পানি পথিকদের।
সইছি মোরা জিল্লাতি আর দুশমনদের টিটকারি
তোমার তরে জান দিয়েছি-বদলা দিলে এই তারি?

জওয়াব-ই-শিকওয়া [অভিযোগের উত্তর]

হঠাত আসিল কালাম-ই আযিম: তোমার এ গানে কাঁদায় প্রাণ,
হৃদয় হতে উছলিয়া-পড়া তোমার প্রেমের এই সে গান।
আকাশেরও দিল কেঁদে ওঠে আজ তোমার করুণ কান্নাতে
বুঝিয়াছি : এই গান আসিয়াছে কত-না গভীর বেদনাতে।
‘শিকওয়া’ এ নয় -প্রশস্তি মোর ! এমন বাচনভঙ্গি তার,
বান্দা এবং খোদার মাঝারে বাঁধিয়াছে সেতু চমতকার!

কি বলিলে তুমি ? মুসলমানের ‘হুর’ সে শুধুই ওয়াদা সার?
কান্না যতই হোক না করুণ, থাকা চাই কিছু যুক্তি তার।
শাশ্বত মোর আইন-কানুন, শাশ্বত মোর নীতি-বিধান;
কাফির যখন মুসলিম হয়-সেও পাবে ‘হুর’ এক সমান!
তোমাদের মাঝে কারা চায় বল সত্যিকারের ‘হুর-কসুর’?
মুসাই তো নাই !- ‘তুর’ পাহাড়ে তো তেমনি করিয়া জ্বলিছে নূর’!

কওমের যারা ওয়ায়েজ, তারা ধার ধারে নাকো সুচিন্তার
বিদ্যুত সম তাদের কথায় হয়না এখন আছর আর।
রোমস্ রয়েছে আযানের বটে, আযানের রূহ বেলাল নাই
ফালসুফা আছে প্রাণহীন পড়ে, আল-গাজালীরে কোথায় পায়!
মসজিদ আজ মর্সিয়া গায়-নামাযী নাহিকো তার ভিতর;
হেজাযিরা ছিল যেমন-তেমন কোথায় মিলিবে ধরার পর!