ঘটনা ১- আমার আপুর (কাজিন) পাশের ফ্লাটের ঘটনা। ভদ্রলোক আর্মি অফিসার আর উনার ওয়াইফ ডাক্তার। সকাল হলে দু'জনেই যার যার কাজে বেরিয়ে পড়েন। আপুর রান্নাঘর থেকে উনাদের রান্নাঘর দেখা যায়। কোলের বাচ্চাকে বুয়ার কাছে রেখে উনারা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকেই বাচ্চাটা প্রচন্ড কাঁদতে থাকে। এটা প্রতিদিনের ঘটনা। একদিন বাচ্চাটা খুব কাঁদছিল। আপু রান্না ঘরে গিয়ে দেখে ওই বাসার রান্নাঘরের হাউজের মধ্যে বাচ্চাটাকে রেখে বুয়া ট্যাপ ছেড়ে দিয়েছে। আর বাচ্চাটা কাঁদছে। আপু, তাড়াতাড়ি করে বাসায় গিয়ে কলিংবেল দেয়। অনেকক্ষণ পর বুয়া দরজা খোলে, কোলে বাচ্চা। সারা গা ভেজা। আপু, এসব ঘটনা বাচ্চার মাকে জানানোর পর উনি কি বলেছিলেন জানেন? “থাক ভাবী, এসব শুনবনা, এসব কথা আমলে নিলে কি আর চাকরী করতে পারব!”

ঘটনা ২- এক মহিলার স্বামী বিরাট ধনী। বিশাল এরিয়ার উপর বাড়ি। তারপরও বউ শখের বসে চাকরি করে, আড়াই বছরের বাচ্চাটা থাকে কাজের মেয়ের কাছে। একদিন বাচ্চাটা খেলছে, আর কাজের মেয়ে এর মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েছে। ঘুম থেকে উঠে দেখে বাচ্চা নাই। সারা বাড়ি, আত্নীয় স্বজন প্রতিবেশিদের কাছে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তাকে পাওয়া গেল না। পরে বাথরুমের দরজার কাছে দেখা গেল একটা স্যান্ডেল। আর বাচ্চাটা বালতির মধ্যে উপুড় হয়ে পড়ে আছে। পানি ভরা বালতি উপুর হয়ে দেখতে গেছে, উলটে পড়ে গেছে, আর উঠতে পারেনি।

ঘটনা ৩- মা পি-এইচ-ডি করতে যাচ্ছে, এয়ারপোর্টে সি অফ করতে গিয়ে তিন বছরের বাচ্চা মেয়েটা চিৎকার করে কাঁদছে। আমাকে ছেড়ে যেওনা মা, আমাকে ছেড়ে যেওনা। কিন্তু পি-এইচ-ডির হাতছানি, সন্তানের মাকে আঁকড়ে ধরে রাখার আকুতি থেকে বড়ো ছিল, মা পি-এইচ-ডি ডিগ্রি নিতে বিদেশে চলে গেলেন।

ঘটনা ৪- মা অনেক বড় একটা প্রতিষ্ঠানের একটা উইং এর ডিরেক্টর। ছেলে থাকে দাদীর কাছে। মা বেশির ভাগ সময়ই শহরের বাইরে থাকেন। ছেলে এখন ক্লাস থ্রি কিংবা ফোরে পড়ে। কিন্তু দাদীকে মা বলে ডাকে। আর মায়ের থাকা না থাকা তার কাছে কোন গুরুত্বই বহন করে না।

ঘটনা ৫- মেয়ের বয়স যখন ৩ মা মেয়েকে নানীর বাড়ী রেখে মাস্টার্স কমপ্লিট করার জন্য অন্য এক শহরে যায়। যদিও প্রতি সপ্তাহ শেষে চলে আসত। মেয়ের আদর যত্নে কোন ত্রুটি হয় নি। কিন্তু মেয়েটা মায়ের সেই না থাকাটা বড় হয়েও ভুলেনি। ২২ বছর পর হঠাৎ একদিন মেয়ে মাকে জিজ্ঞেস করে, আম্মু, তুমি আমাকে ছেড়ে পড়তে গিয়েছিলে কেন। মায়ের সরল জবাব, ওমা! না গেলে পড়ালেখা কমপ্লিট করতাম কিভাবে? মেয়ে সমস্ত ক্ষোভ চেপে রেখে ছোট করে জবাব দেয়, “তাহলে পড়াশোনা শেষ করার আগে বাচ্চা নিয়েছিলে কেন। একেবারে মাস্টার্স কমপ্লিট করেই সন্তান নেবার কথা ভাবতে।”


যে সকল মুসলিমাহরা (মায়েরা) চাকরী করেও সংসার সামলাতে পারেন বলে দাবী করেন, বাচ্চা সামলাতে পারেন তাদের অনেকের ক্ষেত্রেই একটা ব্যাপারে কিন্তু খুবই অবাক লাগে এবং বিচিত্রও লাগে, তারা নিজেদের চাকরী করাটাকে জাস্টিফাই করার জন্য ফুল টাইম হাউস ওয়াইফদের সমালোচনা করে থাকেন। যেমন, আমি চাকরী করেও বাচ্চাকে ‘কোয়ালিটি’ সময় দেই। আর হাউজ ওয়াইফরা সারাদিন বাচ্চার সাথে থেকেও বাচ্চাকে সেই "কোয়ালিটি" টাইম দিতে পারে না, বাচ্চার সাথে ঘ্যান ঘ্যান করে ইত্যাদি ইত্যাদি। আর আমি দিন শেষে এত এত ঘন্টা অফিসে থেকেও বাচ্চাকে সময় দেই, বাচ্চার সাথে খেলি, ওকে ঘুম পাড়াই।

এই ‘কোয়ালিটি’ টাইম বলতে আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন আসলে? সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আপনার দুধের সন্তানটা যে আপনাকে মিস করছে, সেই মিস করাটা আপনি কি কি দিয়ে পুষিয়ে দিতে পারবেন? আপনার বাচ্চাটা পড়ে গিয়ে ব্যথা পেল, মায়ের বুকে যাবার জন্য চিৎকার করে কাঁদতে থাকে, একটু দুধ খাবে-জ্বি না, ফিডার থেকে না, আপনার কাছে থেকে, আপনার মমতা, মায়ের বুকের নিরাপদ আশ্রয়, এই শূন্যতা আপনি কোন ‘কোয়ালিটি টাইম’ দিয়ে পূরণ করবেন? বাচ্চার দাদী, নানী, বাবা এরা যখন মায়ের দায়িত্ব পালন করে, আপনার সন্তানের কাছে থেকে মায়ের জন্য প্রাপ্য ভালোবাসার শেয়ার যখন তারা নিয়ে নেয় কোন ‘কোয়ালিটি’ সময় দিয়ে সেটা আপনি ফেরত নেবেন?


কোন কোন মা বাধ্য হয়েই চাকরী করেন। অনেক সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু নিজের চাকরী করার পেছনে ওই সমস্যাগুলোকেই হাইলাইট করা উচিত। যেমনঃ আমার হাসব্যান্ডের প্রেসারে আমি চাকরী করতে বাধ্য হয়েছি অথবা আমার স্বামী আমাদের খরচ দেয় না, বাধ্য হয়েই আমাকে কাজ করে টাকা আনতে হয়।

কিন্তু এসব না বলে আগ বাড়িয়ে হাউজ ওয়াইফদের সমালোচনা কেন? আবার এমন অনেকেই আছেন যারা মা, মেয়ে, স্ত্রী হয়ে সন্তুষ্ট না, এই পরিচয় তাদের জন্য যথেষ্ঠ না, তারা “কিছু” করতে চায়, ‘নিজের পায়ে দাঁড়াতে’ চায়, স্বামীর মুখাপেক্ষি (?) হয়ে থাকতে চায় না, নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে তাদের বাড়ির বাইরে বের হতেই হবে, একটা চাকরী করতেই হবে। পরিচয় সংকট ঘুচানো?


আমি একজন ‘মা’- এটা আবার কোন পরিচয় হল?

সত্যি এটা কোন পরিচয় নয়, যখন আপনি –কোমর থেকে খুলে আসা জিন্স প্যান্ট পরা সন্তানদের মা হবেন, কিন্তু আপনি যদি ইমাম বুখারীর মা হতেন, নিশ্চয় সেই পরিচয়ে আপনি খুশি হতেন- বলতেন- আমি উম্মে ইমাম বুখারী।

ইসলামকে জীবন বিধান হিসেবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের জন্য মনোনীত করার মাধ্যমে অনুগ্রহ করেছেন। আমরা কি কখনো সেটা অনুভব করি? প্রতিটি বিষয়কে আল্লাহ পরিমিতরূপে সৃষ্টি করেছেন, এবং তাঁর প্রতিটি সৃষ্টির জন্য অবস্থানের যথাযথ ক্ষেত্রও তিনি সৃষ্টি করেছেন। আসমান ও যমীনের সবকিছু কি নিপুণ ভারসাম্যের উপর নির্মিত! যত ভারসাম্যহীন আচরণ করে চলেছে এই কিছু মানুষেরাই। মানুষ আজকে পাখির মত উড়তে শিখেছে, মাছের মত সাগরের তলদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিন্তু যমীনের উপর মানুষের মত হেঁটে বেড়াতে ভুলে গেছে।

একটা বিষয় খেয়াল করেছেন? আজকাল কর্মজীবী মায়েরা বাইরে কাজ করাকে কোন ঝামেলা বলে মনে করছে না, বরং বাড়িতে থেকে সন্তান পরিবার দেখাশোনাকেই তুচ্ছ, ছোট কাজ, নিচু কাজ বলে মনে করছেন- ওটা শুধু তারাই করবে, যাদের ‘কোন উপায় নেই’, আমার এত ডিগ্রী! আমি কেন বাড়িতে থাকব! বা আমি বাড়িতে থাকতে চাই না বলেই এত পড়ালেখা করলাম, এখন রান্নাঘরে জীবন কাটাব?

আর হ্যাঁ , সেই সাথে গৃহিনীদের সমালোচনাও করতেই হবে, সুবহান আল্লাহ। কি আশ্চর্য ব্যাপার! আল্লাহ আমাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জীবদ্দশায়ও উনার পিছে নামাজ পড়ার থেকে বাড়ীর সবথেকে ভেতরের ঘরে নামাজ পড়ায় মহিলাদের জন্য বেশি নেকীর কথা উল্লেখ করে গেলেন, মহিলাদের উপর কোন অর্থনৈতিক দায়িত্বও আমাদের রব্ব চাপিয়ে দেন নি, মাহরামের বাড়ীর মধ্যেই যাকে রাণী হয়ে থাকার মর্যাদা দিলেন সে কিনা মাঠে ময়দানে অফিসে কাজ করে রাণী থেকে চাকরাণী হতে চায়! যে পরিস্থিতির চাপে বাধ্য সে ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও যায়, কিন্তু যে শুধুমাত্র “আমাকে কিছু করে দেখাতে হবে” কিংবা “একটা ক্যারিয়ার গড়তে হবে” টাইপ মানসিকতা নিয়ে বাড়ীর সুরক্ষিত পরিবেশ থেকে বাইরের অরক্ষিত পরিবেশে পা বাড়ায় তার কথা আর কি বলব! সুবহান আল্লাহ!

আমরা একজন মা কিংবা স্ত্রী হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাই না। আমরা আছিয়া, মারিয়াম, খাদিজাহ, ফাতিমাহ হতে চাই না।

প্রশ্ন জাগতে পারে, মা হওয়া-স্ত্রী হওয়া- কন্যা হওয়া- এগুলো আবার কি ধরণের কথা? এইটা কি কোন ক্যারিয়ার হল?

এটা আমাকে ক্যারি করে কতদূর নিয়ে যাবে? উত্তরে যদি বলি, জান্নাত!

আসুন চারজন জান্নাতী নারীর কথা জেনে নেই, তাদের কি ক্যারিয়ার ছিল দেখি,

“জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: জান্নাতি নারীদের সরদার মারিয়াম বিনতে ইমরান এর পরে ফাতেমা, খাদিজা ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া। [তাবরানী, আল্লামা আলবানীর সিলসিলাতুল আহাদিস আস-সহীহা, হাদিস: ১৪৩২]


আমরা মায়েরা, আজকে বাইরে কাজ করার জন্য অস্থির! হ্যাঁ চাকরী করার জন্য এক্সকিউজ হিসেবে খাদিজাহ যে ব্যবসা করেছিলেন সেটা ঠিকই মনে রাখি। কিন্তু এটা ভুলে যাই যে উনি ব্যবসায় লোক লাগিয়েছিলেন, নিজে থেকে বাড়ীর বাইরে গিয়ে বাণিজ্য করেন নি।

এমন একজন মহিলা উনি ছিলেন যার কাজের লোকের যোগান থাকা সত্ত্বেও নিজ হাতে স্বামীর খাবার তৈরি ও পরিবেশন করতেন। আছিয়া কি ছিলেন? অনেক বড় আলেম? বড় ব্যবসায়ী? মারিয়াম? উনার এমন কি ছিল যার জন্য সৃষ্টিজগতের সকল নারীর উপর তাঁকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হল? – একজন মা ছিলেন, শ্রেফ একজন সতীস্বাধী মা, ব্যাস।

ফাতিমাহ? বাড়ির কাজ করতে করতে হাতে ফোসকা পড়ে গিয়েছিল। বাবার কাছে কাজে সাহায্য করার মানুষ চেয়েও পাননি। একান্ত প্রয়োজন না হলে বাড়ীর বাইরে বের হতেন না। সংসারে ছিল সীমাহীন অভাব অনটন। আমাদের মধ্যে যারা সংসারে স্বচ্ছলতা আনার জন্য চাকরী করতে হবে বলে অযুহাত দেখাই তারা একবার চিন্তা করে দেখেন তো, ফাতিমাহ্‌র সংসারের থেকেও বেশি অভাব আপনার সংসারে আছে নাকি। তো, অভাব অনটনের এই সংসারে দিনরাত খাটুনি করা এই মানুষটা কি গুণে জান্নাতের রমণীদের সর্দারনী হবেন? কি কারণে? কেন মুজাহিদা নুসাইবাহ নিবতে কা’বের থেকেও তাঁর মর্যাদা বেশি? তিনি একজন ভাল স্ত্রী ছিলেন, একজন ভাল মা, একজন ভাল গৃহিনী।

আমরা এমন একটা জেনারেশন তৈরি করেছি যাদের বেশিরভাগ মা-ই চাকুরী করেন। আর সবথেকে বেস্ট জেনারেশন যারা ছিলেন নিজ গৃহই ছিল সে সকল মায়েদের সবকিছু। আমরা কেন যেন, নারী হিসেবে বেস্ট জেনারেশনকে ফলো করতে চাই না।

আমরা এমন এক জেনারেশন গড়ে তুলছি যারা ঝাড়ু দেয়া, ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া, রান্না করা, সেলাই করাকে ছোট চোখে দেখি। অথচ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের জুতা নিজেই সেলাই করেছেন। এমন একটা জেনারেশন যেই জেনারেশনের মায়েরা বাচ্চার জামার বোতাম পর্যন্ত সেলাই করে লাগাতে পারেনা। যেই জেনারেশন নিজ স্বামী সন্তানের আবদারগুলো অফুরন্ত নেকীর বিনিময়ে পূরণ করার চেয়ে অফিসে গিয়ে একটা নির্দিষ্ট মাসিক ইনকামের বিনিময়ে বাইরের মানুষের ফরমায়েশ খাটাকে অধিক সম্মানের চোখে দেখেন।

যেই মা সারাদিন সকালে উঠে বাবার নাস্তা তৈরি, বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানো, কোলের বাচ্চার একটু পর পর দুধ খাওয়ানো, দিনের মধ্যে কত শত বার বাচ্চার হাগু-হিসু-বমি পরিষ্কার করা, এরপর আবার দুপুরের খাবার তৈরি, কাপড় ধোয়া, আবার বাচ্চা কানতে শুরু করলেই চুলা অফ করে দৌড় দিয়ে তাকে শান্ত করা, গোসল করানো, নামাযের সময়ের ঠিক আগেই যখন বাচ্চা হাগু বা হিসু করে দেয়, সেই আবার গা পরিষ্কার করা, বাচ্চাকে পরিষ্কার করা, নিজের আর বাচ্চার কাপড় বদলানো... সারাদিন শেষে ক্লান্ত যে মা ঠিকমত ঘুমাতেও পারে না...।। আরও আরও কত কি! ... এই মা আর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসে কম্পিউটারের সামনে বসে এসি রুমে বসে কাজ করা মা কি সমান হতে পারে?

না পারে না। দু’জনের মর্যাদা কখনও সমান হতে পারে না।


আমার কাছে বাড়ীর বাইরে গিয়ে অনেক বড় কোন কোম্পানীতে উচ্চপদে চাকরী করার থেকে দিনে কয়েকবার বাবুর হাগু পরিষ্কার করা অনেক বেশি সম্মানজনক। এইটাই আমার ‘কোয়ালিটি’ টাইম।

জেনে রাখুন, আপনার সন্তান যখন কেবল মা-কেই খোঁজে, তখন বাবা, নানা-নানী, দাদা-দাদী কিংবা খালার কোল সেই অভাব পূরণ করতে পারে না। সারাদিন ছোট শিশুটাকে মায়ের সঙ্গ থেকে দূরে রাখার পর আপনার কোন ‘কোয়ালিটি’ টাইম সেই অভাবটা পূরণ করতে পারবে না।

আজকে কোলের সন্তানকে দিনের শেষ সময়টুকু বরাদ্দ করে যে ‘কোয়ালিটি’ সময় দেয়ার কথা আপনি বলছেন কাল আপনার সন্তানও আপনাকে ওল্ড হোমে ব্যাপক সুযোগ সুবিধার মধ্যে রেখে সপ্তাহে একবার ‘কোয়ালিটি’ টাইম দেবে, এরপর সেও লিখবে, আমি আমার বাপ মাকে ‘কোয়ালিটি’ সময় দেই। যারা বাপ মায়ের সাথে এক বাসায় থাকে তারা তো এই ‘কোয়ালিটি’ টাইম দিতে পারে না, ঠিকমত খেদমতও করতে পারে না। আমি ঠিকই সবথেকে ভাল ফ্যাসিলিটির ওল্ড হোমে তাদেরকে রেখেছি, সার্বক্ষণিক ডাক্তার আছে সেখানে। এটা আছে সেটা আছে। আর প্রতি উইকেন্ডে উনাদের সাথে দেখা করতে যাই, অনেক মজা করি, দেখভাল করি, খোঁজ খবর নেই এবং হ্যাঁ, খুবই ‘কোয়ালিটি’ সময় কাটাই।