আগে আমি নিজেকে একজন “ক্যারিয়ার উইমেন” ভাবতাম। আমার সন্তান থাকবে কিন্তু তাদের দেখাশোনার জন্য আমি টাকা দিয়ে মানুষ রাখব, যাতে আমার ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। কিন্তু ইসলাম আমার জীবনকে একজন স্ত্রী ও মা হিসেবে ভিন্নভাবে দেখতে শিখিয়েছে। সিদ্ধান্ত নিলাম আমার সন্তানদের আমি নিজেই দেখাশোনা করব।

বুঝতে পারছিলাম আর সব কর্মজীবী মায়েদের মতো সন্তান লালন, ঘর দেখাশোনা, ক্যারিয়ার গড়া এসব একসাথে করতে গেলে আমার সময়ে বেশ টান পড়বে। এতগুলো চরিত্রে একইসাথে কাজ করার ভেলকি থেকে আমি নিজেকে দূরে রাখতে চাইলাম। আর নিজের সন্তানের সাথে আলাদা একটা বন্ধন তৈরী করা, তার প্রথম হাঁটা, প্রথম কথা বলার দৃশ্য দেখা, তাকে একজন ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ থেকে আমি নিজেকে বঞ্চিত করতে চাইনি। আমি নিজেকে একজন সার্বক্ষণিক মা’য়ে পরিণত করতে চাইলাম, আমার সন্তান যেন সবসময় ঘরে তার মা’কে পায় সেটা নিশ্চিত করতে চাইলাম।

ইসলাম আমাকে শিখিয়েছে যে এই সবকিছুই ঐ অতিরিক্ত অর্থের চেয়ে অনেক দামী—যা আমি বাইরে কাজ করে উপার্জন করতাম। আমি সেটা বুঝতে পারলাম। সুতরাং বাইরের দিকে, উপার্জনের দিকে আমার যে মনোযোগ ছিল তা চলে গেল একটা সুন্দর ইসলামি পরিবার গঠনের দিকে, যেখানে স্বামী বাইরে উপার্জন করে আর স্ত্রী ঘরে সন্তানদের দেখাশোনা করে। শারিফাহর ভাষায়,

“আমি তো এটা ভাবতেও পারি না যে কেউ আমার সবটুকু দায়িত্বই নিজের কাঁধে নেবে, কিন্তু দ্বীন একজন স্বামীকে সেটাই করতে বলেছে। তুমি যদি এই দিকটায় সীমা নির্ধারণ করে দাও, তাহলে তুমি আসলে তাকে পুরোপুরি পুরুষ হতে দিচ্ছ না। আল্লাহ তাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তার পুরোটা তাকে পালন করতে দিচ্ছ না।”

আমার ভেতরে একটা স্বেচ্ছাচারী আমি ছিল, যার সাথে আমি আপোষ করলাম। সে পদত্যাগ করল—একজন সত্যিকারের ভালো মুসলিমকে আমি বিয়ে করব তাই।

বই: ফ্রম মাই সিস্টারস' লিপস্
মূল: নাইমা বি. রবার্ট
অনুবাদ: নাবিলা আফরোজ জান্নাত
সম্পাদনা: সাজিদ ইসলাম
Bookmark Publication