১৯২০ সাল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে মাত্র কয়েক বছর হলো। তখন আমেরিকাতে মহিলাদের সিগারেট পান করাটা—বিশেষত জনসম্মুখে—ছিলো বেশ আপত্তিকর একটি বিষয়। সাধারণভাবে মহিলাদের প্রকাশ্যে সিগারেট পান করাকে ট্যাবু বলে ভাবা হত। এই সময় অ্যামেরিকান টোবাকো কোম্পানীর প্রেসিডেন্ট জর্জ.ডব্লিউ.হিল তার ব্যবসায়ের ব্যাপারে সচেতন হয়ে উঠলেন, কেননা মহিলারা যখন টোবাকো ও এই সম্পর্কিত পণ্য ভোগ থেকে বিরত আছে তার মানে সমাজের একটি বড় অংশই তার এই পণ্যের ভোগকারী নয়। তো এই অবস্থায় কোম্পানীর পক্ষ থেকে এডওয়ার্ড বার্নেসকে তলব করা হলো। এডওয়ার্ড বার্নেস সিগমোন্ড ফ্রয়েডের ভাতিজা। বার্নেস আব্রাহাম ব্রিলের—যিনি ফ্রয়েডের একজন ছাত্র—যার সাথে এই বিষয়ে কথা বলে একটি উপায় বের করলেন। এরপর থেকে বার্নেস প্রচার করতে লাগলো যে সিগারেট পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো ও উপকারী, ওজন কমাতে সাহায্য করে। এরপর আস্তে আস্তে এই প্রচারণায় নতুন মাত্রা যুক্ত হলো, ১৯২৯ সালের দিকে বার্নেস প্রচার করতে লাগলো যে “সিগারেট, পান করা নারী স্বাধীনতার প্রতীক, পুরুষের অধীনতা থেকে মুক্ত হওয়ার চিহ্ন”, বার্নেস তার একজন নারী বন্ধুর সাহায্যে কিছু নারীকে দিয়ে সিগারেট পান করতে করতে নিউইয়র্ক সিটির ইস্টার সানডে প্যারেড অতিক্রম করার জন্য জোগাড় করলো, সাথে কিছু ফটোগ্রাফারও ভাড়া করে নিলো যাতে এর প্রমাণ থাকে যদি না সংবাদপত্র মাধ্যম একে হাইলাইট করতে আগ্রহী না হয়। তবে ভাগ্য বার্নেসের ভালোই ছিলো বলা যায়, পরদিন নিউইয়র্ক সিটি সংবাদপত্রে “Group of Girls Puff at Cigarettes as a Gesture of Freedom” শিরোনামে একটি সংবাদ বের হলো। ফলে অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণ হলো, মহিলাদের সিগারেট পানের সংখ্যা পূর্বের থেকে বেড়ে গেলো। এরপর থেকে বার্নেসকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি, সে কাজ করে গেছে অনেকের সাথেই, বিনিময়ে জুটলো “The Father of Public Relations” খেতাব, আর পশ্চিমে জন্মদাতা পিতার থেকে নয়া নয়া তত্ত্বের জন্মদাতাদের মর্যাদা বেশি এটা আশা করি সবারই জানা আছে।

বার্নেস তার এই অভিজ্ঞতাকে একটি বইয়ের আকার দিয়েছে যার নাম “The Propaganda.” বইটিতে বার্নেস তার চাচা ফ্রয়েডের তত্ত্বের সাহায্যে গণমানুষের চাহিদা, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষাকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে ব্যাপারে আলোচনা করেছে। যা পশ্চিমা বিশ্বে অত্যন্ত সমাদৃত ও বহুল বিক্রিত একটি বই। সে বইয়ের একেবারে প্রথমদিকেই সে লিখেছে,

“The conscious and intelligent manipulation of theorganized habits and opinions of the masses is an important element in democratic society. Those who manipulate this unseen mechanism of society constitute an invisible government which is the true ruling power of our country. We are governed, our minds are molded, our tastes formed, our ideas suggested, largely by men we have never heard of.”

মানুষের কিছু চাহিদাকে কিভাবে নির্দিষ্ট একটি দিকে প্রবাহিত করে ‘অদৃশ্য সরকার/রাজা’দের স্বার্থ কিভাবে হাসিল করা যায় তা এই বইতে বেশ সুন্দরভাবে চিত্রিত হয়েছে। বার্নেসের ভাষায় এটি একটি অনিবার্য কাজ যা ছাড়া সমাজ সঠিকভাবে চলতে পারে না।

“To-day, however, a reaction has set in. The minority has discovered a powerful help in influencing majorities. It has been found possible so to mold the mind of the masses that they will throw their newly gained strength in the desired direction. In the present structure of society, this practice is inevitable. Whatever of social importance is done. to-day, whether in politics, finance, manufacture, agriculture, charity, education, or other fields, must be done with the help of propaganda. Propaganda is the executive arm of the invisible government” (পৃ-২০)

আমার মত অনেকেরই ভুল ধারণা আছে “মাই লাইফ—মাই রুলিং—মাই চয়েজ” আসলে ব্যাপারটা কিন্তু মোটেই এমন নয়; কেননা পশ্চিম আদতে হিউম্যানিজম, লিবারেলিজ, গণমানুষের যুগ ইত্যাদি কথাবার্তা বৃদ্ধ মানুষের মত বারবার আওড়ালেও আসলে তারা পুরো জনগোষ্ঠীকে নির্দিষ্ট কিছু মানুষের হাতের পুতুল করে রাখতে চায়, নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণীর ইচ্ছা-অনিচ্ছার ছাঁচে পুরো জনগোষ্ঠীর ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষাকে গড়ে তুলতে চায়। তারা আমার আপনার সামনে অজস্র বিকল্প বা অল্টারনেটিভ রেখে দিবে; মুভি দেখো ভালো লাগে না তবে গান শোনো, তাও ভালো না লাগলে গেইম খেলো, এরপরেও ভাল্লাগেনা ভাব না গেলে নীল জগতে মুখ গুঁজে থাকতে পারো। আমরা ভেবে নেই আসলেই তো অনেক অনেক বিকল্প, আমার যেটা ইচ্ছা সেইটাই আমি বেছে নিতে পারি এবং পারবো। তবে সত্য হলো এই বিকল্পগুলোও কিন্তু সেই নির্দিষ্ট শ্রেণীর ইচ্ছারই প্রতিচ্ছবি। বার্নেসের মতে মানুষের চাহিদাকে মোল্ড করার জন্য মানুষের মনস্তত্ত্ব বুঝা খুবই দরকার। মানুষের নফসে কিছু সাধারণ চাহিদা আছে যখন সেগুলোকে যথাযথ বোঝা সম্ভব হবে তখন সেই চাহিদাকে পুঁজি করে অনায়াসেই মানুষের চাহিদাকে নির্দিষ্ট একটি দিকে প্রবাহিত করা সম্ভব। আপনাকে অনায়াসেই আপনার ইচ্ছাকে নদীর পানির মত এদিক ওদিকে প্রবাহিত করা হবে কিন্তু আপনি এর ঘুণাক্ষরেও টের পাবেন না। বার্নেসের ভাষায়,

“If we understand the mechanism and motives of the group mind, is it not possible to control and regiment the masses according to our will without their knowing it?” (পৃ-৪৭)

অবশ্যই সম্ভব। মনে করেন মানুষের নফসের চাহিদা হলো তার ক্ষুধা লাগে আর ক্ষুধা লাগলে তাকে কিছু খেয়ে তার ক্ষুধা নিবারণ করতে হয় এবং মানুষ নতুন নতুন সুস্বাদু খাবারের প্রতি লালায়িত থাকে, সেই হরেক রকমের স্বাদ পেতে চায়, নিতে চায়। নফসের এই স্বভাবগত এবং একান্ত জরুরী এই চাহিদাকে কিভাবে নির্দিষ্ট একটি স্বার্থে প্রবাহিত করা যায় বলুন তো? হ্যাঁ! ক্ষুধা মেটানোর বাহানায় নব্য নব্য সুস্বাদু খাবার বাজারে নিয়ে আসা হবে, আর বলা হবে এগুলো হচ্ছে জান্নাত থেকে আনা খাবার, এর স্বাদ একবার নিলে মরার আগ পর্যন্ত মুখে লেগে থাকবে, জীবনেও ভুলা যাবে না আরো নানাধরণের বাজে কথা, ফেসবুক থেকে ওয়েবসাইটে নান্দনিক ছবি তুলে দিতে হবে, রেস্টুরেন্টে এসেও যাতে পৃথিবীর মানুষের সাথে যুক্ত থাকা যায় সেই কারণেই ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থা করে দিতে হবে, মানুষের কষ্ট হলে তাদের বাসায় যেয়ে খাবার দিয়ে আসতে হবে, তবুও তাদের চিন্তাকে এদিকে আকর্ষিত করতেই হবে। এরকমভবে মানুষের নফসের কিছু চাহিদার উপর ভিত্তি করে মানুষের পারসেপশানকে একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত করলেই পরে মানুষ সেদিকে আকর্ষিত হবে। আর মানুষও ধারণা করতে থাকবে আমি আমার নিজেরই, আমি নিজে আমি ছাড়া কারো কথাই শুনি, অজস্র বিকল্প থেকে আমি চুজ করি আরো হেনতেন। কিন্তু আসলে এত এত বিকল্প সবই কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু মানুষের স্বার্থোদ্ধার ছাড়া আর কিছুই নয়। আপনাকে আমাকে দূর থেকেই নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে কিছু মানুষ। বার্নেসও জানত যে এরকমটা সম্ভব, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই সম্ভব। তার ভাষায়,

“The recent practice of propaganda has proved that it is possible, at least up to a certain point and within certain limits............. But at least theory and practice have combined with sufficient success to permit us to know that in certain. cases we can effect some change in public opinion with a fair degree of accuracy by operating a certain mechanism, just as the motorist can regulate the speed of his car by manipulating the flow of gasoline.” (পৃ-৪৭,৪৮)

ভাবার কোনো কারণ নেই আমি-আপনি আমাদের চিন্তাধারায় স্বাধীন ও স্বয়ংসম্পূর্ণ, না ব্যাপার এমন মোটেই নয়, বরং আপনার চিন্তাধারাকে কিছু মানুষের সমন্বয় বলা যায়, কিন্তু আপনার নিজের নয় এতটুকু তো ইয়াকীনের সাথেই বলা যায়,

“A man sits in his office deciding what stocks to buy. He imagines, no doubt, that he is planning his purchases according to his own judgment. In actual fact his judgment is a melange of impressions stamped on his mind by outside influences which unconsciously control his thought.” (পৃ- ৪৯)

তো আপনার কি ধারণা? এই চিন্তাগত ডাকাতি কতটুকু পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে? ধারণা করতে পারেন কি? আসুন বার্নেসের মুখেই শুনি,

“In some departments of our daily life, in which we imagine ourselves free agents, we are ruled by dictators exercising great power. A man buying a suit of clothes imagines that he is choosing, according to his taste and his personality, the kind of garment which he prefers. In reality, he may be obeying the orders of an anonymous gentleman tailor in London. This personage is the silent partner in a modest tailoring establishment, which is patronized by gentlemen of fashion and princes of the blood. He suggests to British noblemen and others a blue cloth instead of gray, two buttons instead of three, or sleeves a quarter of an inch narrower than last season. The distinguished customer approves of the idea” (পৃ- ৩৫)

“give us our ideas, tell us whom to admire and whom to despise, what to believe about the ownership of public utilities, about the tariff, about the price of rubber, about the Dawes Plan, about immigration; who tell us how our houses should be designed, what furniture we should put into them, what menus we should serve on our table, what kind of shirts we must wear, what sports we should indulge in, what plays we should see, what charities we should support, what pictures we should admire, what slang we should affect, what jokes we should laugh at?” (পৃ-৩২)

হ্যাঁ! সত্যিই এরকমই। আপনি কি বাসায় মায়ের হাতে ভুনা গরু পছন্দ করবেন নাকি ম্যাকডোনাল্ডসের বার্গার পছন্দ করবেন এখানে অদৃশ্য হাত করছে, শার্ট কি কয়েক বছর আগের মডেলের পরবেন নাকি একদম লেটেস্ট ব্র্যান্ড আর মডেলের পরবেন তাও তারাই ঠিক করে দিচ্ছে, আপনি বাসায় বানানো জামা পরবেন নাকি টিভির বিজ্ঞাপনে কোনো নায়িকার গায়ে জড়ানো ব্র্যান্ডের জামা পরবেন এটাও কিন্তু আপনার নিজের ঠিক করা না, এটা তাদেরই ঠিক করা যারা পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে। আপনি কি চলনসই একটা এন্ড্রয়েড কিনবেন নাকি বাতাসের আগে দৌড়ানো রঙচঙা মোটা অঙ্কের এন্ড্রয়েড ফোনটি কিনবেন তাও কিন্তু আপনার দেখা বিজ্ঞাপনই ঠিক করে দিচ্ছে, আর বিজ্ঞাপনও কিন্তু সেই তারাই ঠিক করছে। আপনি কেমন জিনিস পছন্দ করবেন, আপনি কোন গাড়ি কিনবেন, আপনার কেমন চশমা চাই, আপনি ঈদের দিন ছবি তুলবেন কিনা, আপনার জীবনের অতীব মূল্যহীন সময়টুকুকেও আপনি সেলফির ফ্রেমে বাঁধবেন কিনা, আপনি কোন পড়ালেখাকে নির্বাচন করবেন, আপনার সিজিপিএ কেমন হওয়া উচিত, কেমন সিজিপিএ না পেলে সমাজে মুখ দেখানোই দায় হয়ে পড়ে, আপনার বাবা-মা আপনার কাছ থেকে কেমন সিজিপিএ আশা করেন, আপনি বিয়ের সময় কেমন পাত্রী পছন্দ করবেন, আপনি আমেরিকাকে ভালোবাসবেন কিনা, জঙ্গীদের ঘৃণা করবেন কিনা, কোন কোন স্ট্যান্ডার্ডে আপনি কোনো কিছুকে পছন্দ করবেন বা ঘৃণা করবেন, গলায় জড়িয়ে নেবেন বা ছুঁড়ে ফেলবেন, আপনি কোন দৃষ্টিতে জগতকে দেখবেন, কিভাবে দেখবেন, আপনার প্রতিটি জিনিসই আসলে সেই নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর স্বার্থোদ্ধারের জন্য তাদের ছাঁচে তৈরি। আমাদের নিজস্ব কোনো চিন্তাভাবনা নেই, তারাই তাদের স্বার্থমোতাবেক আপনার আমার চিন্তাকে আবদ্ধ করে একটি দিকেই চিন্তা করতে বাধ্য করছে। সামনে বৈচিত্র্য, বিকল্প, অল্টারনেটিভ নামক ছেলেভুলানো খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রেখেছে, যাতে আমি আপনি একেবারেই একঘেয়েমিতে বোর না হয়ে যাই, ক্ষণিকের জন্যও যাতে আমার সন্দেহ না জাগে আমাকে কেউ আদৌ নিয়ন্ত্রণ করছে কিনা। আমার আপনার অগোচরেই আমাদের চিন্তার রেখাকে তারা নিজের হাত দিয়েই এঁকে দিয়ে সীমানা ঠিক করে দিচ্ছে। বস্তুবাদের গভীর কুয়ায় ফেলে দিচ্ছে, যেখানে রব হলো—একমাত্র নিজের নফস, কামনা-বাসনা, আর আকাঙ্ক্ষা।

প্রমাণ দেন! আপনার কথার পিছনে শক্তপোক্ত দলিল দেন দেখি! বড় বড় কথা শুধু!

আচ্ছা, এই নেন একটা ক্রাইটেরিয়া দিলাম যাচাই করে নিবেন। আজ থেকে আপনি সেলফি তোলা বন্ধ করেন, সবার মত শার্টের মডেল চুজ করবেন না, একেবারেই মানুষের মত চলবেন না, বন্ধ করেন অধিকাংশ মানুষ যেভাবে ভাবে সেভাবে ভাবা, ধর্ম-কর্ম শুরু করেন, বিশেষ করে ইসলাম পালন, নিজের আখিরাত নিয়ে চিন্তা করতে শুরু করেন, আপনি ইসলামের কথাগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরেন, শবে-বরাত, আর মেরাজের বাহিরেও ইসলামের কথাগুলো জোরে জোরে বলতে থাকেন, বলতে থাকেন সুদের বিরুদ্ধে, যিনার বিরুদ্ধে, শিরকের বিরুদ্ধে, কুফরের বিরুদ্ধে, জিহাদের কথা বলেন, বলেন উম্মাতের বিরুদ্ধে হওয়া অত্যাচার সম্পর্কে, বলেন শাসকদের ব্যাপারে; তারা আপনাকে এলিয়েন বলবে, খ্যাত বলবে, একগুঁয়ে বলবে, জঙ্গী বলবে, আপনার পিছনে লাগবে, কিন্তু তাদেরই ভাষা মোতাবেক আপনি আরেক ধরণের লাইফস্টাইল চুজ করেছেন, আপনি একটু ভিন্ন অল্টারনেটিভ বেছে নিয়েছেন। কিন্তু তারা আপনার এই বিকল্পকে মেনে নেবেনা, তারা সমকামিতা আর ট্রান্সজেন্ডাপনাকে ডিফারেন্ট লাইফস্টাইল এবং তাদের মূলধারা মনে করলেও আপনি আপনার স্বাধীনতা মোতাবেক কাজ করে এবং ভিন্ন লাইফস্টাইল চুজ করে হতে পারবেন না মূলধারা। কারণ আসলে এতগুলো মানুষ কথা বলছে না তাদের ভিতর থেকে কথা বলছে পুঁজিবাদী চিন্তাধারা দ্বারা গড়িত, লালিত, পালিত দাসানুদাস মনোভাব, চিন্তাধারা। তারা আসলে সেই সেই গোষ্ঠীর চিন্তার যাদুতে মোহগ্রস্থ, তারা নিজেরা নিজেদের হারিয়ে ফেলেছে তাদের মধ্যে, যেন ফানা হয়ে গেছে তাদের মধ্যে। সবসময়ই মনে রাখবেন, আপনি যখনই তথাকথিত ‘Illusion of Choice’ এর গণ্ডীর বাহিরে নিজে থেকে কিছু করতে চাইবেন, একটু ভিন্নভাবে ভাবতে চাইবেন, ভাবাতে চাইবেন, সমাজকে পরিবর্তন করতে চাইবেন, ডেমোক্রেসির বিকল্পে খিলাফতের কথা বলবেন, যুদ্ধের বদলে জিহাদের কথা বলবেন, তারা আপনার দুশমন হয়ে যাবে, কেননা বললামই তো তারা আসলে বিকল্প বিকল্প খেলা খেলছে আমাদের সাথে, তারা নিজেদের ঠিক করে দেওয়া বিকল্পের বাহিরে আর কাউকে কোনো প্রকার বিকল্পের দিকে যেতে দিবেনা। এই কারণে যখনই নিজের ফিতরাতের অনুসরণ করবেন, সত্যের পথে হাঁটতে চাইবেন, তারা আপনার বিরোধিতা করবে, আপনাকে মানুষের কাতার থেকে জন্তু-জানোয়ারের কাতারে শামিল করবে। কেননা আপনি তাদের দেখানো অল্টারনেটিভ থেকে ভিন্ন অল্টারনেটিভ চুজ করেছেন, আর তারা আপনাকে নিজেদের নির্ধারিত অল্টারনেটিভ ছাড়া অন্য অল্টারনেটিভ বাছাই করতে দিতে চায় না।