Exoticism বা অনন্যতা। বর্তমান সমাজে প্রচলিত একটি বাজওয়ার্ড (Buzz Word)। আমাদের সমাজে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে প্রতিনিয়ত এটির প্রয়োগ হচ্ছে, তাই এর ব্যাপারে জ্ঞান রাখা আমি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। কিন্তু, বিষয়টি আসলে কি? চলুন এর ব্যাপারে কিছু জানা যাক।

শাব্দিকভাবে এর দুটি অর্থ রয়েছে। প্রথমত, এর দ্বারা বুঝায় বর্ণিল বা অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যের দরুন কোন কিছুর আকর্ষণীয় হওয়ার গুণকে। দ্বিতীয়ত, এটি এমন সব শৈলী বা রীতিনীতিকে বুঝায় যা কোন দূরবর্তী অজানা-অচেনা দেশের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে পরিচিত। পারিভাষিকভাবে, এক্সটিসিজম (Exoticism) ইউরোপীয় শিল্প-সাহিত্য, নকশা ও চিত্রকলার একটি ধারা, যাতে অনুপ্রেরণা হিসেবে রয়েছে দূরবর্তী অজানা-অচেনা অঞ্চলের সেই সমস্ত রীতি-নীতি, আচার-আচরণ ও শৈলীসমূহ যেগুলো দ্বারা ইউরোপীয় শিল্প সমাজ মুগ্ধ হয়েছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, এই ধারার শিল্প ও সাহিত্য কর্মগুলোতে বিদেশী সমাজ ও সংস্কৃতিগুলো রহস্যময় ও উদ্ভট হিসেবে রুপায়িত হয়েছে। অবশ্য এই সমস্ত রুপায়নে সেই সব এক্সটিক বা অনন্য সংস্কৃতিগুলোর (পশ্চিমা বিচারে) সঠিক চিত্র অঙ্কনের চেয়ে ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক ধ্যান-ধারণা, ইউরোপিয়ান জনমানুষের চাহিদা ও তার (ইউরোপের) শিল্পী ও সাহিত্যিকদের খেয়ালখুশিই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে । বিদেশী সমাজ ও সংস্কৃতিকে নিজেদের খেয়ালখুশি মত গ্ল্যামারাইজেশন এবং স্টেরিওটাইপিংয়ের এই প্রক্রিয়াটিকে বলা এক্সোটিসাইজেশন (Exoticization) [১]। পাঠকরা এখন নিশ্চয় বুঝতে পারছেন যে বিষয়টি ওরিয়েন্টালিস্ট চিন্তাধারার সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত।

বেশিরভাগ সময়েই এই ধারার শিল্পী ও সাহিত্যিকরা তাদের সাহিত্য বা চিত্রকলায় সেই সমস্ত বিষয়ে ফোকাস করেছে যা পশ্চিমা সমাজে অনুপস্থিত। তা করতে গিয়ে তারা বরাবরই প্রাচ্যের সমাজকে তাদের খেয়ালী মনের ইচ্ছে অনুযায়ী স্টেরিওটাইপিং করেছে। এই ক্ষেত্রে তারা বুদ্ধিবৃত্তিক সততা বা সুবিচার প্রদর্শন করেনি। এর সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হতে পারে "হারেম"। হারেম আসলে কি বা এটি ভিতরে দেখতে কেমন এর সঠিক ধারণা পশ্চিমা সমাজে ছিল না। তাই হারেম নিয়ে তাদের প্রচুর ফ্যান্টাসি ছিল এবং এটি নিয়ে তারা অনেক চিত্রকর্ম ও সাহিত্য করেছে। যারা ওরিয়েন্টালিস্ট আর্টের সাথে পরিচিত তারা জানেন যে মুসলিমদের হারেম পশ্চিমাদের বিভিন্ন চিত্রকলায় কিরকম এক্সটিক হিসেবে ফুটে উঠেছে। যেহেতু হারেমের ব্যাপারে তাদের পরিষ্কার ধারণা ছিল না তাই মনের খুশি মত এর ছবি এঁকেছে তারা। আর সে সময় নগ্নতাও পশ্চিমা চিত্রকলায় ব্যাপকভাবে জায়গা করে নিচ্ছিল। ফলে সেই সময়ের এক্সটিসিজম ধারার শিল্পীদের আঁকা ছবিতে হারেম মানেই অসংখ্য সুন্দরী নারী হয় নগ্ন হয়ে নৃত্যগীত করেছে অথবা হুঁকো টানছে অথবা একসাথে সবাই নগ্ন হয়ে গোসল করছে, যেমনটা দেখানো হয়েছে "The Turkish Bath" এ [২] (ছবিটি খুবই অশ্লীল, তাই না দেখার জন্য অনুরোধ করা হল)। সাথে সাথে ছবিগুলোতে লাইটিং এর কন্ট্রাস্ট এমনভাবে করা হত যেন প্রাচ্য মানেই রহস্যঘেরা মায়াপুরি। অন্যদিকে এক্সটিসিজমের প্রভাবে ইউরোপিয়ান ইরোটিক সাহিত্যে হারেম একটা কমন থিম হয়ে উঠে। যেমন "A Night in a Moorish Harem" এ কীভাবে এক ব্রিটিশ নাবিক জাহাজডুবির পর এক মরোক্কান হারেমে আমন্ত্রিত হয়েছে, তথাপি সেই হারেমে বিভিন্ন জাতীয়তার ৯ জন উপপত্নীর সাথে সেক্স করেছে তার রগরগে বর্ণনা আছে [৩]।

এখন সমস্যা হল যে, এই সমস্ত ছবি ও সাহিত্য পশ্চিমা সমাজে প্রাচ্যের প্রতিনিধিত্ব করত। ফলে পশ্চিমা গণমানস এই সমস্ত এক্সটিক ওরিয়েন্টাল চিত্রকলা ও সাহিত্যে যা দেখত ও পড়ত তাকেই প্রাচ্যের মূলধারা হিসেবে মনে করত। তাছাড়া শিল্পী ও সাহিত্যিকরাও জনগনের চাহিদা মাথায় রেখেই কাজ করত। হারেম দিয়েই উদাহরণ দিই আবার। জনগণের চাহিদা ছিল হারেমের এমন এক চিত্র যেখানে হারেমের নারীরা হবে লাস্যময়ী, রহস্যময়ী ও লম্পট। তারা কঠোর পিতৃতান্ত্রিক মুসলিম সমাজের শৃঙ্খলা হতে মুক্তি চায়। ইউরোপের পুরুষরা হচ্ছে তাদের উদ্ধারকর্তা। এই সমস্ত নারীরা যৌনসুখ বঞ্চিত, তাই তারা ইউরোপের সুপিরিয়র (?) পুরুষদের দ্বারা যৌনসুখ পাবার জন্য মুখিয়ে আছে [৪]। সুতরাং, জনগণের চাহিদা অনুযায়ী এই সমস্ত আর্টিস্ট ও সাহিত্যিকদের দায়িত্ব ছিল কীভবে হারেমের মুসলিম নারীদের লাম্পট্য ও রহস্যময়ী সৌন্দর্যের মিশ্রণে একটি এক্সটিক রূপ দেয়া যায়।

এখন, এটি করতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা প্রাচ্যের তথা মুসলিম সমাজের একদম অজনপ্রিয় সাংস্কৃতিক উপাদানকে মূলধারার সংস্কৃতি হিসেবে চিত্রায়ন করেছে। যেমন ধরুন ব্যালী ড্যান্সের কথা। মিসরে উদ্ভূত যৌনাশ্রয়ী এই নাচটি কিছু বিশেষ অঙ্গভঙ্গির জন্য অন্যান্য নাচ হতে ভিন্ন। পূর্বে এটি অবশ্যই একটি ফ্রিঞ্জ কালচারাল ইলিমেন্ট (Fringe Cultural Element) ছিল। অর্থাৎ, সমাজের খুবই অল্প সংখ্যক মানুষের মধ্যে এটি সীমাবদ্ধ ছিল। ভোগ-বিলাসে নিমত্ত দুর্নীতিবাজ অল্প সংখ্যক এলিট শ্রেণীর লোকেরাই ছিল এর পৃষ্ঠপোষক। ঘাওয়াজি (Ghawazi) [৫] নামে এক ধরনের যাযাবর শ্রেণীর নারীরা এই ধরনের নৃত্য পরিবেশন করত। এটি তখন রাকস শারকি (Raqs Sharqi) নামে পরিচিত ছিল। এদের বেশিরভাগই ছিল পতিতা এবং কোন সম্মানীয় লোকের বাড়িতে এগুলো কখনোই পরিবেশিত হত না [৬]। তাছাড়া সে সময়ে তাদের পোশাক-আশাকে চর্ম প্রদর্শনেরও কোন ব্যাপার ছিল না। যাই হোক, ঊনবিংশ শতাব্দীতে ফ্রেঞ্চদের নজরে পড়ে এটি। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার মুসলিম নারীদের যৌনাসক্ত লম্পট রূপে চিত্রায়িত করার এই সুবর্ণ সুযোগ তারা কেন ছাড়ব? তারা এতে বাড়াবাড়ি রকমের নগ্নতা যোগ করে এক্সটিক হিসেবে প্রদর্শন করে, এটিকে মূলধারার আরব সমাজে প্রচলিত একটি ব্যাপার হিসেবে প্রচার করে তারা। এদের আঁকা ছবিগুলোর প্রায় সবগুলোতেই তারা এমন এক মুসলিম সমাজ প্রদর্শন করেছে যেখানে তীব্র যৌনাসক্ত (?) মুসলিমরা তন্ময় হয়ে অর্ধনগ্ন নারীদের নাচ দেখছে, যেমনটা দেখানো হয়েছে "La danse de l'almée" নামক ছবিতে [৭]। এছাড়াও মুসলিম নারীদের এই এক্সটিক লম্পট রূপ দেয়ার একটি আধুনিক চেষ্টা দেখা গেছে ফ্রেঞ্চ আলজেরিয়াতে। ফ্রেঞ্চরা তাদের দেশে বিভিন্ন পোস্টকার্ড ছাপাত যাতে আলজেরিয়ান নারীদের নগ্ন ও অর্ধনগ্ন ছবি থাকত। সেই সমস্ত ছবির মডেলরা ছিল পতিতা এবং ছবিগুলোর স্টুডিও সেটআপ ছিল হারেমের মত। ছবিগুলো দেখলে মনে হবে যেন হারেমের নারীরা পর্দার আড়ালে লম্পট ও লাস্যময়ী এবং তারা তাদের ফ্রেঞ্চ কলোনিয়াল মাস্টারদের সাথে যৌনসম্পর্ক করতে খুবই আগ্রহী। Malek Alloula তার "Le Harem Colonial" বইতে বিষয়টি সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন [৮]।

এখন এই এক্সটিসিজম কীভাবে ব্যবহৃত হয় সেই আলোচনায় আসি। ইউরোপিয়ান কলোনিস্টরা তাদের কলোনিগুলো ছেড়ে গেলেও কলোনিয়াল সাবজেক্টরা (প্রজারা) যেন এখনও মানসিকভাবে তাদের দাস হয়ে থাকে তার পাকা বন্দোবস্ত করে গেছে। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তারা তাদের কলোনিগুলোতে কিছু তাবেদার দালাল রেখে গেছে যাদের কিবলা হল স্ব স্ব কলোনিয়াল পাওয়ারগুলো। পশ্চিমকে সভ্যতার ধারক ও বাহক মনে এরা, এবং এদের মতে পশ্চিমই তাদের অসভ্য (?) দেশে সভ্যতার আনয়নকারী। তাই তারা পশ্চিমাদের কাছে সবসময় ভালো সাজতে চায় ও পশ্চিমারা তাদের যেরূপ দেখতে চায় তারাও সেরূপ হবার চেষ্টা করে। এখন, পশ্চিমাদের চোখে প্রাচ্য হল এক্সটিক, পশ্চিমে প্রাচ্যের রিপ্রেসেন্টেশন এক্সটিসিজম দ্বারা মোড়ানো। পশ্চিম ও তার জনগণ প্রাচ্যকে এই এক্সটিক রুপেই দেখতে ভালোবাসে; এই এক্সটিক রূপ যতই বাস্তবতা বিবর্জিত ও ইউরোপিয়ান বায়াস সমৃদ্ধ হোক না কেন। তাই ভালো সাজতে গিয়ে দেশে দেশে তাদের দালালরা নিজেদের সেই ইউরোপিয়ান লেন্স অনুযায়ী এক্সটিক রূপে সাজায় ও এতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। ইউরোপ এই সমস্ত দালালদের কোন দেশজ সংস্কৃতির প্রশংসা করলে তারা গর্বিত হয়ে যায়, এবং একে হাজার বছরের _ _ সংস্কৃতি হিসেবে প্রচার করে। সাংস্কৃতিক এই উপাদানটি সেই সমাজের কত শতাংশ মানুষের মধ্যে প্রচলিত তা এখানে ধর্তব্য নয়, সমাজের ০.১% মানুষও যদি তা মানে ও পালন করে তাহলেও একে জাতির হাজার বছরের সংস্কৃতি ও প্রাণের উৎসব হিসেবে প্রচার করা হবে, শুধুমাত্র পশ্চিমাদের এপ্রুভাল লাগবে, ব্যাস। পশ্চিমারাও এই সমস্ত দালালদের প্রমোট করে। তারা দালাল মিডিয়াগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ইনভেস্ট করে যাতে এই সমস্ত এক্সটিক কালচারাল ইলিমেন্ট মূলধারায় রূপ নেয়। সমাজের অধিকাংশ মানুষ যেন এগুলোকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নেয় ও আপন করে নেয়। এভাবেই পশ্চিমাদের ম্যানুফেকচার করা স্টেরিওটাইপকে মুসলিমরা তাদের সংস্কৃতির পরিচায়ক বৈশিষ্ট্য হিসেবে গ্রহণ করে নেয় ও ক্ষেত্রেবিশেষে গর্বিতও হয় যদিওবা শুরুর দিকে অধিকাংশ মুসলিম একে ঘৃণার চোখে দেখত। সুতরাং, পশ্চিমাদের কাছে এক্সটিসিজমের একটি ব্যবহার হচ্ছে একে দিয়ে প্রাচ্য তথা মুসলিম সমাজকে তাদের ছাঁচ অনুযায়ী আকৃতি দেয়া। এছাড়াও এক্সটিসিজমের প্রভাবে মুসলিমরা নতুন করে তাদের বর্তমান বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উপাদানে (যেমনঃ বিভিন্ন উৎসব) নব নব জিনিস যোগ করে এদেরকে রঙিন ও আকর্ষণীয় তথা এক্সটিক করতে চাইছে যাতে পশ্চিমারা তাদের বাহবা দেয়; অর্থাৎ, এই এক্সটিসিজম আমাদের মন-মানসকে আরও শৃঙ্খলায়িত করতে ব্যবহৃত হচ্ছে।

উপরে বর্ণিত ব্যালী ড্যান্স দ্বারাই উদাহরণ দিই। ব্যালী ড্যান্সকে মাগরেব ও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমদের একটি সাংস্কৃতিক পরিচায়ক বৈশিষ্ট্য হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য পশ্চিমারা অনেক চেষ্টা-তদবির করেছে। লোকাল রাকস শারকীর সাথে নিজেদের মাল মশলা এড করে পশ্চিমারা তাদের নতুন এই ম্যানুফেকচারড এক্সটিক নাচটিকে মুসলিম সমাজে স্বাভাবিকীকরণের জন্য মূল ধারার মিডিয়ায় (যেমনঃ ফিল্ম, নাটক) তুলে আনতে সহায়তা করে, বিশেষতঃ মিশরে। মুসলিম সমাজে অবস্থানরত তাদের তাবেদারা এর প্রচারণার দায়িত্ব পায়। এই তাবেদাররা নতুন প্রজন্মের মুসলিমদের শিখায় যে, বেলী ড্যান্স তাদের সংস্কৃতির অংশ, এটি তাদের একটি এক্সটিক সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য। তাদের কোনভাবেই একে হারাতে দেয়া উচিত না, বরং এটিকে নিয়ে গর্ব করা উচিত এবং সংস্কৃতির নিদর্শন বানিয়ে ফেলা উচিত। ব্যাপারটা যদি আমি এভাবে বলি, ধরুন দৌলতদিয়া পতিতালয়ের পতিতাদের মধ্যে কোন বিশেষ ধরনের নাচ বা গানের ধারার উদ্ভব হল। এখন পশ্চিমের লোকেরা এসে যদি বুঝায় যে এটি আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতির (?) অংশ তাই আমাদের একে সাদরে গ্রহণ করতে হবে এবং এটিকে নিয়ে গর্বিত হতে হবে তাহলে ব্যাপারটি ঠিক তেমন দাঁড়াবে। এভাবেই আর্জেন্টিনার পতিতালয়ে চলা ট্যাঙ্গো (Tango) নাচ আজ তাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে এবং ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের খেতাবও পেয়ে গেছে। ঠিক একি কথা বলা যায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বা সাম্বা ড্যান্সের (Samba Dance) ব্যাপারে। কেন? পশ্চিমাদের চোখে এক্সটিক বলেই তাদের নিয়ে আজ এত মাতামাতি? ওদের চোখে এক্সটিক হবার জন্যই কি আজ অশ্লীলতা ও মূর্খতায় ভরপুর সব উৎসব ও কাজ হয়ে গেছে গর্বের জায়গা?

উপরোল্লিখিত বিভিন্ন নাচ বা মঙ্গল শোভাযাত্রা হচ্ছে জাস্ট কিছু উদাহরণ, আপনাদেরকে বুঝানোর জন্য। পশ্চিমাদের এই মাতামাতি সমস্ত অনৈসলামিক ব্যাপারের ক্ষেত্রেই সত্য। পশ্চিমাদের চোখে মুসলিম সমাজে প্রচলিত তাই-ই এক্সটিক ও প্রশংসিত হবে, যা অনৈসলামিক, ইসলামিক কোন বৈশিষ্ট্য প্রশংসিত হবে না। ইউরোপে রেনেসাঁ বা নবজাগরণের মূল থিমই ছিল ক্লাসিক্যাল যুগে ফিরে যাওয়া, অর্থাৎ, গ্রেকো-রোমান যুগে ফিরে যাওয়া, ও আইনের উৎস হিসেবে ঐশ্বরিক বাণীর পরিবর্তে মানুষের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া, অর্থাৎ সেকুলারিজম প্রতিষ্ঠা করা। এই রেনেসাঁ তথা নিও-ক্লাসিক্যাল আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজ হতে আব্রাহামিক ট্র্যাডিশন ঝেটিয়ে বিদায় করা ও এর পরিবর্তে গ্রেকো-রোমান ট্র্যাডিশনকে প্রতিষ্ঠা করা। গ্রেকো-রোমান ট্র্যাডিশন হচ্ছে প্যাঁগান (মূর্তিপূজা) ট্র্যাডিশন, অবাধ যৌনতার ট্র্যাডিশন, পেডেরাস্টির (ছোট ছেলে শিশুদের সাথে পূর্ণবয়স্ক পুরুষদের যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা) ট্র্যাডিশন, জোর যার মুল্লুক তার ট্র্যাডিশন, গণতন্ত্র ও সেকুলারিজমের ট্র্যাডিশন। এই সময়ে খৃষ্টান ধর্ম থেকে যতটুকু পারা যায় আব্রাহামিক বৈশিষ্ট্য মুছে ফেলে একে প্যাঁগান করা হয়েছে, খৃষ্টান ধর্ম পশ্চিমাদের জন্য হয়ে গেছে স্রেফ কালচারাল একটি আইডেন্টিটি। বাইবেলের সমস্ত রথী-মহারথীদের প্যাঁগান রূপ দেয়া হয়েছে, যেমনঃ নবী ও সুপুরুষ দাউদ আঃ এদের হাতে পড়ে হয়ে গেছে দাঁড়ি-গোঁফ বিহীন নগ্ন ডেভিড ঠিক গ্রেকো-রোমান গডদের মত (মিকেলএঞ্জেলোর ডেভিড নামক মূর্তিটি দেখতে পারেন)। তবে যাই হোক এই ভ্রান্ত খৃষ্টান ধর্ম কিন্তু তাদেরকে ক্রুসেডে উৎসাহ দেয়া বন্ধ করেনি আবার, এটি ভুলে যাওয়া যাবে না। সুতরাং, আব্রাহামিক ট্র্যাডিশনের লাশের উপর গড়ে উঠা রেনেসাঁ ভিত্তিক পশ্চিমা সমাজে ইসলামিক কোন কিছু অবশ্যই ভালো লাগার কথা না। তাই এদের চোখে মুসলিম সমাজে প্রচলিত তাই-ই ভালো লাগবে যা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। হতে পারে সেটা অশ্লীল নাচ ( ব্যালী ড্যান্স, শিম্মী [Shimmy]), অথবা মূর্তি নিয়ে মহড়া (মঙ্গল শোভাযাত্রা) অথবা শিরকী গান ও প্রশস্তি (বাউল গান)।

অতএব, আমরা দেখলাম যে কীভাবে পশ্চিম ঠিক করে কোন বিষয়টি আমাদের কালচারের এক্সটিক ব্যাপার হবে। আরও দেখলাম যে, তাদের দেশীয় দালালরা কীভাবে এগুলোকে মূলধারা বানানোর চেষ্টা করে এবং এগুলো নিয়ে গর্ব করার সবক দেয়। এর পরবর্তী ধাপ হচ্ছে সংস্কৃতির পবিত্রায়ন এবং সংস্কৃতিকে আমোঘ অপরিবর্তনীয় একটি বিষয়ে পরিণত করা। এই ধাপে নতুন প্রজন্মের সবাইকে এই শিক্ষাই দেয়া হবে যে, তাদের নিজেদের সংস্কৃতি মহান, সুন্দর ও মূল্যবান; তাদেরকে আরও শিক্ষা দেয়া হবে সংস্কৃতির সংরক্ষণ নীতিতে, তা যতই ক্ষতিকারক হোক না কেন। তাদেরকে বলা হবে নিজেদের সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরতে ও এর এক্সটিক বৈশিষ্ট্যগুলো (যা পশ্চিম দ্বারা নির্ধারিত) হারাতে না দিতে। এই শিক্ষা মতে কোন সংস্কৃতির এক্সটিক ব্যাপারগুলো বাদ দেয়া যাবে না, বরঞ্চ এগুলো নিয়ে গর্ব করতে হবে এবং নিয়মিত এগুলোকে পালন করতে হবে যদিওবা তা আমার ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের বিপরীত হয়। তাই এই মহামূল্যবান সংস্কৃতি ও এর এক্সটিক বৈশিষ্ট্য রক্ষায় মানুষ তার ধর্ম ও সামাজিক মূল্যবোধের বিপরীতে গিয়ে একে নিয়ে আবেগ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে, যেহেতু পশ্চিমা রেটোরিক তাদের এই-ই শিখিয়েছে।

তাই এখন অবধারিতভাবে কথা আসছে সংস্কৃতির ব্যাপারে? সংস্কৃতি কি? মানুষের জন্য সংস্কৃতি নাকি সংস্কৃতির জন্য মানুষ? সংস্কৃতি কি অপরিবর্তনীয়? একটি সংস্কৃতির সমস্ত উপাদানই কি শ্রেয়? একটি সংস্কৃতির কোন উপাদান এক্সটিক হলেই কি তাকে ধরে রাখতে হবে? দীর্ঘকাল ধরে চলা একটি বিষয় আমাদের সংস্কৃতির অংশ বলেই আমাদেরকে কি সেটা ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যেতে হবে যদিওবা তা আমাদের জন্য ক্ষতিকারক হয়? সতীদাহ প্রথার ব্যাপারটিই ধরুন। হিন্দু ধর্মীয় সমাজের এই প্রথাটি হাজার বছর ধরে চলে আসছিল। কিন্তু নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক এই বিকট কুসংস্কারটি এর ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় ভারত থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করা হয়েছে। একই কথা বলা যায় সেবাদাসী প্রথা বা বিধবা বিবাহ প্রথা নিয়ে। সুতরাং, এ থেকে বলা যায় যে কোন বিষয় আমাদের হাজার বছরের সাংস্কৃতিক উপাদান হলেই যে একে আঁকড়ে ধরে রাখতে হবে এমন কোন কারণ নেই। অতএব মানুষের জন্য সংস্কৃতি, সংস্কৃতির জন্য মানুষ নয়। সংস্কৃতি কোন খোদায়ী বাণী নয় যে এর পুরোটার উপর বিশ্বাস আনতে হবে, এর কোন অংশ বাদ দেয়া যাবে না। সংস্কৃতির কোন অংশ আমরা যখন ইচ্ছা তখন ঝেটিয়ে বিদায় করে দিতে পারি। এক্ষেত্রে মুসলিমদের কষ্টি পাথর হচ্ছে ইসলাম। ইসলামের মাপকাঠিতে যা উতরে যাবে তা মুসলিম সমাজে থাকবে আর যা উতরে যাবে না তাকে বিদায় নিতে হবে সে যতই এক্সটিক হোক।

কিন্তু রেনেসাঁ প্রসূত বর্তমান লিবারেল ডিসকোর্সে সংস্কৃতিকে খোদায়ী বাণীর আসন দেয়া হয়েছে। আসমানি কিতাবের নির্দেশ ও সংস্কৃতি এ দু'য়ের মধ্যে সংস্কৃতিকেই বেছে নেয়ার শিক্ষা দেয়া হয়। কালচারাল এক্সটিসিজম সংরক্ষণের ব্যাপারে আপনি দ্বিমত পোষণ করতে পারবেন না যদিও তা আপনার ধর্মীয় শিক্ষার বিপরীত হয় অথবা মন ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হয়। এই ক্ষেত্রে আমি দুটি উদাহরণ দিতে চাই। নামিবিয়াতে হিম্বা (Himba People) নামে একটি ট্রাইব আছে। এদের নারীদের বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে তারা তাদের বুক সম্পূর্ণ উন্মুক্ত রাখে। নিশ্চয় এটি তাদের কালচারের একটি "এক্সটিক" বিষয়। কিন্তু যেকোন বিবেকবান মানুষ মাত্রই বলবেন যে এটি এক্সটিক ব্যাপার হলেও ঠিক নয়। প্রত্যেক মানুষেরই বস্ত্রের অধিকার রয়েছে। কেউ যদি তার অধিকারের ব্যাপারে অজ্ঞতাবশত না জানে তাহলে বিবেকবান মানুষের উচিত সেটা সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করা। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে বর্তমান লিবারেল কালচারাল প্রিজারভেশনের (সংস্কৃতির সংরক্ষণ নীতি) ন্যারেটিভ অনুযায়ী এই সমস্ত কালচারাল এক্সটিসিজম ধরে রাখতে হবে যদিও খোলা চোখেই দেখা যাচ্ছে যে এই এক্সটিসিজমের কারণে সেই ট্রাইবের নারীদের সম্মানহানী হচ্ছে। মূল্যবান (?) এক্সটিসিজমের জন্য এরা প্রাগৈতিহাসিক জীবনধারা যাপন করুক, তাতে কি? আমার তো আর ক্ষতি হচ্ছে না, উপরন্তু এদেরকে ব্যবহার করে ট্যুরিজমের নামে টু'পাইস তো কামানো যাচ্ছে। তেমনি মিয়ানমারে কায়ান নামক এক জনগোষ্ঠী (Kayan People) রয়েছে। তারা সৌন্দর্য বর্ধনের নামে গলায় এক ধরনের রিং পড়ে ছোটবেলা থেকে যার ফলে বয়সকালে তাদের গলা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি লম্বা হয়ে যায়। বিষয়টি স্বাস্থ্যগত দিক হতে তেমন ভালো নয়, তাছাড়া এটি যে কারও জন্য ভীষণ অস্বস্তিকরও বটে। বিষয়টি "এক্সটিক" হলেও মুসলিমদের দায়িত্ব হবে তাদেরকে বুঝানো যাতে তারা নিজেদের ক্ষতি না করে। সংস্কৃতির নামে নিজেদের ক্ষতি করার তো কোন কারণ থাকতে পারে না। কিন্তু লিবারেল ভেকধারী কালচারাল প্রিজারভেশনিস্ট সন্ত্রাসীরা এরূপ কিছু বললেই তেড়ে আসবে। যা তারা নিজেদের জন্য চাইবে না তা অন্যদের জন্য চাইবে যাতে ট্যুরিজম করে কিছু পয়সা কামানো যায়। সুতরাং এই ধরনের ন্যারেটিভের ফাঁদে পা দিয়ে নিজেদের ক্ষতি করার কোন কারণ থাকতে পারে না। যদি তা করি তবে এটি হবে নেহায়েত মূর্খের মত কাজ। আমি এত গুলো কথা মূলত এই উদ্দেশ্যেই লিখলাম যেন পাঠক বুঝতে পারে যে সংস্কৃতির কোন অংশ অনন্য বা এক্সটিক হলেই এর মানে এই নয় যে তাকে ধরে রাখতে হবে।

বর্তমানে আমরা দেখতে পাই যে ইসলামের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের প্রয়োগকৃত শক্তিশালী অস্ত্রগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এই এক্সটিসিজম কেন্দ্রিক। এই কিছুদিন আগেই গজানো "হাজার বছরের বাঙ্গালী সংস্কৃতি, বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব" মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরুদ্ধে আপনি কিছু বললেই হয়ে যাবেন উগ্রবাদী সন্ত্রাসী। এর বিরুদ্ধে কিছু বলা পাপ যেহেতু এটি আমাদের "এক্সটিক" কালচার (যদিও নব গজানো), উপরন্তু এটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে পশ্চিমাদের এপ্রোভালও পেয়ে গেছে। পশ্চিমাদের এপ্রোভাল পাওয়ার পর বিশাল গর্বের সাথে সারাদেশের মিডিয়ায় এটি প্রচারিত হয়েছে এবং সোৎসাহে এই মঙ্গল শোভাযাত্রার সন্ত্রাস স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, অফিস, আদালত সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে ও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। লিস্টে এরপর কি আছে? পুরান ঢাকার সাক্রাইন উৎসব? পুরান ঢাকাতে গত কয়েক বছর ধরে সাক্রাইন পালনের নামে যে মাতলামি চলছে তাকে এক্সটিক সংস্কৃতি হিসেবে পশ্চিমারা যদি এপ্রোভাল দিয়ে দেয় তাহলে এটিকেও হাজার বছরের বাঙ্গালী সংস্কৃতির নাম দিয়ে আমাদের গলধঃকরণ করানো হবে। এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলায় ও ধ্বংসের ডাক দেয়ায় পশ্চিম ও তার দেশীয় দালালরা বলে যে ইসলাম নাকি সংস্কৃতি ধ্বংসকারী। আমাদের জবাব হচ্ছে - হ্যাঁ, ইসলাম অতি অবশ্যই বাতিল ধ্বংস করতে এসেছে। সুতরাং, সংস্কৃতির নামে চলা অপসংস্কৃতি যা ইসলামের আইন মোতাবেক হারাম তাকে কোন বিবেচনা ছাড়াই ধ্বংস করা হবে। ইসলাম পবিত্রতা পছন্দ করে। এটি বিভিন্ন সংস্কৃতির এন্টি-ইসলামিক অশ্লীল "এক্সটিক" উপাদান যেমন ব্যালী ড্যান্স, ট্যাঙ্গো ড্যান্স বা সাম্বা ড্যান্স সহ্য করতে পারে না। তেমনি পারেনা মূর্তির বন্দনা কেন্দ্রিক সংস্কৃতি, যেমনঃ মঙ্গল শোভাযাত্রা। একই ভাবে পারেনা কোন মানবগোষ্ঠীর নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়ানো অথবা নিজেদের ক্ষতি করা। পশ্চিমারা এগুলোকে যতই এক্সটিক বলে দাম দিক, এগুলোর কানা কড়ি মূল্যও আমাদের কাছে নেই। এই সমস্ত সংস্কৃতি ইসলামী ভাবধারার সাথে সাংঘর্ষিক। ইসলাম এদের অস্তিত্ব স্বীকার করে না এবং এদের ধ্বংসের জন্য ইসলাম ক্রমাগত সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।

আমাদের কথা হচ্ছে সংস্কৃতির কোন উপাদান এক্সটিক হলেই তাকে প্রিজারভ করার আইডিয়া ইসলাম দ্বারা তো সম্মত নয়ই বরং তা দাবী হিসেবে বিজ্ঞানসম্মতও নয়। উপরে বিশদভাবে আমরা তাই-ই প্রমাণ করে এসেছি। তাই আমাদের উচিত ওদের এই সমস্ত অভিযোগে মোটেও বিচলিত না হওয়া। হ্যাঁ, আমরা সংস্কৃতির নামে এই সমস্ত মূর্খতা ধ্বংস করতে এসেছি, এবং আমরা এটি নিয়ে গর্বিত। কারণ, আমরা পশ্চিমকে আমাদের কিবলা বানাইনি। পশ্চিম আমাদের সংস্কৃতির যতই প্রশংসা করুক, এক্সটিক বলে স্বীকৃতি দিক ইসলামের মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ না হলে একে ধ্বংস করে দেয়া হবে। ভুলে গেলে চলবে না যে, আমাদের পথ চলার জন্য নির্দেশকারী পুস্তক এসেছে মহান রবের থেকে। তাই সংস্কৃতি আমাদের জন্য কোন ঐশী বাণী নয় যা আমাদের মাথা পেতে মেনে নিতে হবে। যা ইসলাম সম্মত নয় তা বিদায় নিবে। আমাদের বরঞ্চ তাদের পাল্টা প্রশ্ন করা উচিত। তাদের জিজ্ঞাস করা উচিত, কেন সংস্কৃতি ধ্বংস করা খারাপ যদি তা মানুষের জন্য ক্ষতিকারক হয়, বা সমাজের জন্য ক্ষতিকারক হয়? কেন অশ্লীলতা, শিরক ও কুফরীকে আমাদের কালচারের অংশ বলে মেনে নিতে হবে তা যতই সুন্দর কলাকৌশল ও কারুকার্য মণ্ডিত হোক? কেন পশ্চিমাদের সামনে ভালো সাজতে গিয়ে, এক্সটিক হতে গিয়ে নিজেদের ঈমান বিসর্জন দিব? তারা অবশ্যই এর কোন সদুত্তর দিতে পারবে না। তাই আমার আহবান থাকবে সেই সমস্ত মুসলিমদের প্রতি যারা পশ্চিমাদের এপ্রোভালের জন্য তাদেরই তৈরি করা ছাঁচে নিজেদের মানিয়ে নিতে চান, তাদেরই প্রেস্ক্রাইব করা সংস্কৃতি নিয়ে গর্বিত হতে চান। আল্লাহ্‌ আমাদের সংস্কৃতির বেইস হিসেবে দিয়েছেন ইসলাম। তারপরও যদি আমরা পশ্চিমাদের কাছে নিজেদের সমাজের অনৈসলামিক কোন কাজকে এক্সটিক হিসেবে উপস্থাপন করে বাহবা পেতে চাই ও পরিচয় পেতে চাই তাহলে আমরা যেন লাঞ্ছনার জন্য প্রস্তুত হই।

তাই লিখাটি শেষ করছি উমর রাঃ সেই বিখ্যাত উক্তিটি দ্বারাঃ

"আমরা ছিলাম পৃথিবীর সবচেয়ে লাঞ্ছিত-নিগৃহীত জাতি এবং আল্লাহ্‌ তা'আলা ইসলামের মাধ্যমে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন। এরপর যদি ইসলাম ছেড়ে আমরা কখনও অন্য কোনও কিছুর মধ্যে সম্মান খুঁজি, তাহলে আল্লাহ্‌ তা'আলা আমাদের আবার লাঞ্ছিত করবেন”।


১/ https://en.wikipedia.org/wiki/Exoticism

২/ https://en.wikipedia.org/wiki/The_Turkish_Bath

৩/ https://en.wikipedia.org/wiki/A_Night_in_a_Moorish_Harem

৪/ https://en.wikipedia.org/wiki/Harem#Western_representation

৫/ https://en.wikipedia.org/wiki/Ghawazi

৬/ https://en.wikipedia.org/wiki/Raqs_sharqi

৭/ http://www.daytonartinstitute.org/art/collection

৮/ https://en.wikipedia.org/wiki/Malek_Alloula