হঠাৎ করে কয়েকটা পেজের এডমিন হয়ে গেছি। যখন পেজগুলোতে ঢুকি মেসেজগুলো দেখে খুবই interesting লাগে। কয়দিন আগে মেসেজে এক মেয়ে একটা প্রশ্ন করেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে এই প্রশ্নগুলো আমাদের অনেকের মনেই আছে যারা ইসলাম নিয়ে খুব একটা জানেনা! তাই আমি প্রশ্নটার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব হয়েছে!!

প্রশ্নঃ আমার একটি প্রশ্ন আছে—ইসলাম এ তো প্রতিটি মানুষ এর জোড়া আল্লাহ আগে থেকে বানিয়েছে…। আয়াতটা কি সত্যি???? তাহলে যে আজকাল অনেক ধার্মিক ছেলেমেয়ের-ও প্রেমের সম্পর্কে আছে। তাহলে কি আয়াতটা ভুল??? আমি যদি আল্লাহ’র কাছে আমার ভালোবাসার মানুষ এর জন্য দুয়া করি তাহলে??? আমি কীভাবে আল্লাহ’র কাছে দুয়া করব??? এই সম্পর্কে ইসলাম কি বলে??? প্রেম ভালবাসা কি খারাপ??? প্লিজ আমাকে জানাবেন।

উত্তরঃ

আসসালামু’আলাইকুম

আপনার প্রশ্ন পড়ে মনে হচ্ছে ইসলাম নিয়ে আপনি খুবই ভয়ংকর ধারণা পোষণ করছেন। আপনার মন সন্দেহবাতিকগ্রস্থ। আমি আপনাকে স্পষ্ট করে কিছু কথা বলবো। আশা করি আপনি বুঝতে পারবেন। যদিও আপনার প্রশ্নটি নারী-পুরুষ সম্পর্ক নিয়ে; কিন্তু আমি আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই কারণ আপনি কোরআনের আয়াত নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন। একজন মুসলিম সে যদি মনে করে কোরআনের কোন আয়াত ভুল কিংবা তার কোন যথার্থতা নেই তাহলে সে আর মুসলিম থাকতে পারেনা; কেননা আল্লাহ নিজেই কোরআনের সত্যতা দিয়েছেন…

“(এই) সেই মহাগ্রন্থ আল কোরআন এতে কোন সন্দেহ নেই, যারা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করে এই কিতাব তাদের জন্যই পথপ্রদর্শক।” [২:২]

আর তাই কেউ যদি কোরআনের আয়াতকে অস্বীকার করে তাহলে সে আল্লাহকেই অস্বীকার করে, তার মানে সে কাফির! আল্লাহ আমাদেরকে এই ভয়াবহ পরিণতি থেকে রক্ষা করুন…আমীন!


এবার আপনার মূল প্রশ্নে আসি। আপনার প্রশ্নটাকে কয়েকটা অংশে ভাগ করলাম

[#১] প্রত্যেক মানুষের জোড়া কি নির্ধারিত?

[#২] প্রেম করা—মানে সহজ কথায় বিয়ের আগে নারী-পুরুষ অবৈধ সম্পর্ক কি হারাম?

[#৩] প্রেম করা অবৈধ হলে অনেক ধার্মিক ছেলে মেয়ে প্রেম করে কেন?

[#৪] পছন্দের মানুষের জন্য দোয়া করা যাবে কি?

[#১]

জোড়া বিষয়ে কোরআনের স্পষ্ট আয়াত আছে। একটা না, কয়েকটা…

“আমি প্রতিটি জিনিসই জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যাতে করে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।” [৫৯:৪৯]

“পবিত্র নিখুঁত সেই মহান স্রষ্টা, যিনি জুড়ি সৃষ্টি করেছেন সবকিছুর—উদ্ভিদের, স্বয়ং তাদের (মানুষের) এবং এমন সব কিছুরও যাদের তারা জানেনা।” [৩৬:৩৬]

“হে মানুষ! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে।” [৪৯:১৩]

“হে মানুষ! তোমরা সতর্ক হও তোমাদের সেই মহান প্রভুর ব্যাপারে, যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একজন মাত্র ব্যক্তি থেকে এবং তার থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে, আর তাদের থেকেই সৃষ্টি করেছেন বিপুল সংখ্যায় পুরুষ আর নারী।” [৪:১]

এসব আয়াত থেকে একথা দিবালোকের মত পরিষ্কার যে মহান আল্লাহ তায়ালা নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি মানুষকে তার জোড়া বানিয়েই এই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। এমনকি উদ্ভিদও সৃষ্টি করেছেন জোড়ায় জোড়ায়। সুতরাং এই বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই যে আল্লাহ আমাদের জোড়ায় জোড়ায় তৈরি করেছেন কিনা!

[#২]

ইসলামে নারী পুরুষের সম্পর্কের পবিত্র আর বৈধ পন্থা হল বিয়ে। এর বাইরে অর্থাৎ, বিয়ের আগে নারী-পুরুষের সম্পর্ক, বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড, লিভ টুগেদার এসব সম্পূর্ণ হারাম।

এটা শুধু আপনি নয়, নামাজ রোজা করা মুসলিম ছেলেমেয়েদেরও মেনে নিতে কষ্ট হয়! তার কথা তো আপনিই বললেন যে আপনি অনেক ধার্মিক ছেলেমেয়েকেও রিলেশনে থাকতে দেখেছেন। আমরা যারা ইসলামকে একটা পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা হিসেবে মেনে নিয়ে তা জীবনে প্রয়োগ করে দেখাতে পারিনা তার অন্যতম কারণ আমরা ইসলামটাকে দেখি একটা হালাল হারামের লিস্ট হিসেবে

আমরা যখন আমাদের প্রবৃত্তির পূজা করতে যাই, যখন সেখানে ইসলামের বাধা আসে তখনই আগে পিছে চিন্তা না করে আমাদের মনে প্রশ্ন আসে why?? Why is this haraam in islam??

আপনি নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুনতো এই প্রেম করা নিয়ে কোনো প্রশ্ন কি ছোটবেলা থেকে এসেছে? না! আসেনি! আমরা সবাই একটা নির্দিষ্ট বয়স পার করি, যে বয়সটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একই সাথে খুবই ভয়ংকর! যে বয়সটাতে আবেগ, ভালোলাগা, সবকিছু পজিটিভ ভাবা, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি সীমাহীন আকর্ষণ সবকিছু আমাদের চারপাশে গিজগিজ করে!

আর এই বয়সের সরলতা আর ভালোলাগার সুযোগ নেয় শয়তান; আর তা কাজে রূপান্তর করে দেখায় কাফির আর ইসলামের বিরুদ্ধ শক্তি যারা আল্লাহর নয় নিজেদের প্রবৃত্তির পূজা করে!

আর তাই আজকে সমাজে স্কুলে প্রেম, কলেজে প্রেম, ভার্সিটিতে প্রেম, নাটক-সিনেমা-গল্প উপন্যাসে প্রেম! আর এসব দেখে শুধু আপনি নয় অনেকের মনে সেই একই প্রশ্ন why?? Why প্রেম is haraam in islam?? কারণ আল্লাহ মহা পরিকল্পনাকারী! তিনি তাঁর সৃষ্টির জন্য মঙ্গলজনক পন্থাই পরিকল্পনা করেছেন! তিনি মানুষের শরীর আর আত্মিক ক্ষতির আশঙ্কা থেকে মানুষকে মুক্ত থাকার ব্যবস্থা করেছেন। অতি সসীম এই মস্তিষ্ক নিয়ে আমরা কখনও অসীম মহান আল্লাহর পরিকল্পনা বুঝতে পারবো না! কিন্তু আমরা এই দুনিয়াতেই তাঁর পরিকল্পনার বাস্তবায়ন আর আদেশ অমান্যকারিদের পরিণতি দেখেছি, দেখছি, দেখবো ইনশাআল্লাহ!

আমরা একটা হারামকে শুধু হারাম হিসেবে দেখি কিন্তু একটা হারাম শুধু হারাম নয় এটা অনেকগুলো পথ যে পথে মানুষের অপকার আছে সেই পথগুলোও বন্ধ করে দেয়! ইসলামে মদ হারাম। কিন্তু মদ তো ভালো লাগে বলেই মানুষ খায়!! তাহলে হারাম হবে কেন?? এটা বোঝা আমার আপনার কাছে দুরহ তো বটেই হজরত ওমর (রাঃ) ও বুঝতে পারেননি! তার প্রার্থনার প্রেক্ষিতে আল্লাহ তিনবার আয়াত নাযিল করার পর হজরত ওমর (রাঃ) বুঝতে পারেন কেন মদ হারাম হলো! আর আমরা এখন জানতে পেরেছি বর্তমানে বিশ্বে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ…অ্যালকোহল! মদপান! যেটা আল্লাহ ১৪০০ বছর আগেই হারাম করেছেন!

ইসলামে এরকম অনেকগুলো হারামের একটি হলো বিয়ে বাদ দিয়ে কিংবা বিয়ের আগে নারী-পুরুষ প্রেমের সম্পর্ক! আর বরাবরের মতই ইসলামকে অন্তরে ধারণ না করে পাশ্চাত্য আর কুফরি সিস্টেমের আধুনিকতা অন্তরে ধারণ করা আজকের তরুণ তরুণী সেই হারামের ধার ধারে না! অনেকের কাছে এই হারামের জন্য ইসলাম হয়ে যায় সেকেলে! তার পরিণতিও হাতে নাতে!! পেটে অবৈধ বাচ্চা নিয়ে হাসপাতালে গর্ভপাত, রিকশা-সিএনজি তে মূল্যবোধ-নৈতিকতা বিসর্জন, বয়ফ্রেন্ডের লালসার শিকার হয়ে বন্ধুবান্ধব নিয়ে গণধর্ষণ, বাজারে অনিচ্ছাকৃত ফাঁস হওয়া ভিডিও, নিজের অসম্মান, পরিবারের অসম্মান আর সবশেষে এত এত অসম্মান সইতে না পারে গলায় ফাঁস!

: আরেহ, না না না!! আমি ওসব করতে যাবো কেন? আমার নিয়ত তো পবিত্র। কি সব বলছেন!

হ্যাঁ আমি জানি! শুধু আপনি না সবাই এমনকি যারা এই পরিণতিগুলো বরণ করেছে তারাও বলেছিল, “না না আমরা তো সত্যই ভালোবাসি!! আমরা এসব করব না!” সেজন্যই প্রথমে বলেছিলাম ইসলামে কোন একটা হারাম শুধু হারাম নয় এটা অনেকগুলো ক্ষতির পথও রুদ্ধ করে। যে পরিণতি-গুলোর কথা বললাম নিজের প্রতি সৎ থেকে বলুনতো এই পথগুলো কে উন্মুক্ত করেছে?? সহজ উত্তর—নারীপুরুষ অবৈধ সম্পর্ক যেটা ইসলাম হারাম করার পরও তারা মানতে চায়না! ইসলাম সেই জীবন ব্যবস্থা যা মানুষকে নৈতিকতা আর মূল্যবোধ শিক্ষা দেয়! মানুষকে নিজের শরীর আর মনের নিরাপত্তা দান করে! আর তাই ইসলামে নিজের শরীর আর মনের নিরাপত্তা এসেছে পবিত্র বিয়ের মাধ্যমে।

আল্লাহ বলেন…

“আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে, তিনি তোমাদের (মানব জাতির) মধ্য থেকেই সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য (বিপরীত লিঙ্গের) জুড়ি, যাতে করে তোমরা বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করতে পারো! এ উদ্দেশ্যে তিনি তোমাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন হৃদ্যতা-বন্ধুতা আর দয়া-অনুগ্রহ অনুকম্পা। এতে রয়েছে বিপুল নিদর্শন চিন্তাশীল লোকদের জন্য।” [৩০:২১]

সুবহানাল্লাহ। আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেছেন বিবাহের মাধ্যমেই নারী পুরুষ পাবে প্রশান্তি, সৃষ্টি হবে হৃদ্যতা-বন্ধুতা, দয়া অনুগ্রহ অনুকম্পা! আর এটা চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শনস্বরূপ! কিন্তু আমরা কেউ চিন্তাশীল নই! আমরা মানুষের হারাম সম্পর্ক দেখে স্বপ্নের বীজ বুনি! হলিউড-বলিউড তারকাদের “রিলেশনশিপ উইথ অমুক” দেখে ভাবি হ্যাঁ “আমারও চাই”!! সেলিনা-বিবার, এঞ্জলিনা-ব্র্যাড পিট লিভ টুগেদার দেখে ভাবি, “আহা! তারা কতই না সুখে আছে! কেন যে ইসলামে এসব হারাম করল বুঝি না!!” এসব আধুনিকতার art of living এর রঙিন পর্দাটাই আমরা শুধু দেখি! পর্দার আড়ালের কঙ্কালসার, কুড়ে কুড়ে ধ্বংস হওয়া জীবনবোধের গল্প আমরা কেউ জানিনা! আসুন কয়েকটা গল্প শুনি……

শুধু আমেরিকাতেই একজন পুরুষ বিয়ের আগে গড়ে ৮ জন নারীর সাথে সম্পর্কে জড়ায়! তাদের সবার সাথেই অবাধ যৌনসম্পর্ক থাকে। এরপর সে একটা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারে। এবং বিয়ের পরও দুই তিনটা অবৈধ যৌনসম্পর্ক থাকে একজন আমেরিকানের। ভারতের একটি পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে (৮-১০ বছর আগের, জাকির নায়িকের লেকচার থেকে) শুধু মুম্বাই শহরেই ৫০% মেয়ে স্কুল জীবন শেষ করার আগেই তাদের কুমারিত্ত হারায়! এখন ২০১৩!! সেই % টা কি এখন ১০০%?? কিংবা তার কাছাকাছি??? আর যেসব তারকার প্রেমের সম্পর্ক দেখে আমাদের আবেগ উদ্বেলিত হয়ে উঠে তাদের কিছু গল্পও নিজ থেকে খুঁজে দেখবেন, আপনার গা গুলিয়ে বমি আসবে।


বোন! হিসাবটা সোজা! মহান আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্ধারণ করেছেন সেখানেই কল্যাণ আর প্রশান্তি লুকায়িত আছে! আর যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা অমান্য করায় আছে এই দুনিয়ায় ক্ষতি, লাঞ্ছনা, অসম্মান আর আখিরাতেও কঠিন শাস্তি! এই অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক, মোবাইল ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলা, একসাথে ঘুরতে যাওয়া, long drive (মতান্তরে sex drive), অন্ধকার কফি শপ!!

অতি সহজ ভালোলাগা থেকে শুরু করে দুইটা শরীর কাছাকাছি আসলে দুর্বল চিত্তের অতি স্বাভাবিক শরীরের চাহিদা চরিতার্থ করার প্রয়াস আসবেই। আপনি বা আমরা কেউই “innocent intention” এর দোহাই দিয়ে এই চাহিদাকে হালকা করতে পারবনা! একটি হারাম রিলেশন যেখানে আস্থা, বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ, প্রশান্তির চেয়ে বেশি থাকে সন্দেহ, শরীরকেন্দ্রিক ভোগবাদী চিন্তা, মানসিক উত্তেজনা আর ধীরে ধীরে আত্মিক অবক্ষয়! আমরা আমাদের চারপাশে এগুলোই দেখে এসেছি, এখনো দেখছি আর ভবিষ্যতেও দেখব! আর তাই ইসলাম দুইজন নারী পুরুষকে বিয়ের পবিত্র বন্ধনে বেঁধে তাদের শারীরিক, আত্মিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে! একজন স্ত্রী, একজন স্বামী একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, আস্থা, বিশ্বাসে যে সম্পর্ক তৈরি করে সেখানেই আছে যথার্থ tranquility!! একজন গার্লফ্রেন্ড তার বয়ফ্রেন্ডের হাত ধরে যতটা অনিশ্চিয়তা নিয়ে ভাবে, “ও কি সত্যিই আমাকে ভালবাসে??” একজন স্ত্রী তার স্বামীর হাত ধরে ততটাই আস্থা আর বিশ্বাসের সাথে ভাবতে পারে, “He is mine”!!

একজন গার্লফ্রেন্ড যতটা অনিশ্চয়তা, ভয় আর আত্মসম্মানের হুমকি নিয়ে একজন বয়ফ্রেন্ডের সাথে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের দিকে যায়, একজন স্ত্রী ঠিক ততটাই আস্থা আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে ভাবতে পারে তার স্বামী তার পবিত্রতার সঙ্গী, তার স্বামী তার অনাগত সন্তানের বাবা!!

ইসলাম এভাবেই সুন্দর! এভাবেই পবিত্র! এভাবেই শরীর মনের ক্ষতি রোধ করে!

এভাবেই দুইজন নারী পুরুষকে একেবারে আপন করে দেয়! তার জন্য কোন হারাম সম্পর্ক দরকার পড়েনা! মিথ্যার মায়ায় সান্ত্বনা খোঁজার দরকার পড়েনা!!

[#৩]

আপনার এই প্রশ্নটা আমাদের সবার জন্যই লজ্জার! কিছু ইসলামের লেভেলধারী কুপ্রবৃত্তির পূজারির কার্যকলাপের কারণে প্রতিনিয়ত ইসলামকে অপমানিত হয়! একটা কথা মনে রাখবেন, মানুষকে দিয়ে ইসলামকে বিচার করবেন না—ইসলামকে দিয়ে মানুষকে বিচার করবেন! আমার এতক্ষণের আলোচনা থেকে নিশ্চয় আপনি এটা বুঝতে পেরেছেন যে আপনি যাদের দেখেছেন তারা নিষিদ্ধ কাজ করছে। ইসলাম নিয়ে কি জানার দরকার পড়েনা? আমরা স্কুলে বিদায় হজ্জের ভাষণ পড়েছি! যেখানে রাসুল (সাঃ) বলে গিয়েছেন, “আমি তোমাদের কাছে দুইটা জিনিস রেখে যাচ্ছি, কোরআন আর সুন্নাহ (রাসুল (সাঃ) এর হাদিস)”! সুতরাং ইসলামে কোনটা সঠিক আর কোনটা বেঠিক আমরা তা কোরআন সুন্নাহ থেকে শিখব, কোন মানুষকে দেখে নয়—হোক তারা নিজেদের পরেহেজগার বলে জাহির করে!

[#৪]

আপনার এই প্রশ্নটা খুবই interesting! আমরা কি পছন্দের মানুষের জন্য দোয়া করতে পারব?? অবশ্যই আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারবেন যেন আপনার জোড়ার সাথে বিয়ের পবিত্রতায় আবদ্ধ হতে পারেন! আপনার জন্য নির্ধারিত মানুষটি যেন সৎ, তাকওয়াবান হয়! সে যেন আপনার হৃদয়ে প্রশান্তির বার্তা নিয়ে আসে! But it doesn’t mean that আপনি একটার পর একটা সম্পর্কে জড়াবেন আর প্রত্যেকজনকে আপনার জোড়া ভাববেন!! নিজের নফসকে সংযত করে, নিজের প্রতি, আল্লাহর প্রতি সৎ থেকে আপনি অপেক্ষা করবেন! আপনি যদি নিজের সততা বজায় রাখতে পারেন তাহলে আশা করা যায় আপনার জোড়াও সংযম অবলম্বন করে আপনার অপেক্ষায় থাকবে। আপনি সেই পুরুষটির জন্য সততার ভিত্তিতে প্রস্তুতি নেন ইনশাআল্লাহ মানুষটিকে আল্লাহই আপনার কাছে পৌঁছে দেবেন!

Allah has already written the name of your spouse for you. What you need to work on is your relationship with ALLAH (swt). He will send him to you when you are ready. It is just a matter of time.

আর যদি চান আপনার মানুষটি সৎ আর ভাল হবে তাহলে আপনাকেও তা অর্জন করতে হবে। কারণ আল্লাহ স্পষ্ট করেই বলেছেন…

“(জেনে রেখো) নষ্ট নারীরা হচ্ছে নষ্ট পুরুষের জন্য, নষ্ট পুরুষরা হচ্ছে নষ্ট নারীদের জন্য, (আবার) ভাল নারীরা হচ্ছে ভাল পুরুষদের জন্য, ভাল পুরুষরা হচ্ছে ভাল নারীদের জন্য, (মোনাফেক) লোকেরা (এদের সম্পর্কে) যা কিছু বলে তারা তা থেকে পাক পবিত্র; (আখিরাতে) এদের জন্যই রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রেযেক।” [৪:২৬]

অনেক কথা বলে ফেলেছি। অনেক কথাই আপনি জানতে চাননি আমি নিজ থেকেই বলেছি একটা পরিপূর্ণ সমাধানমূলক উত্তর দেওয়ার জন্য। হয়তো আপনি আমার সব কথা বুঝতে পেরেছেন, হয়তো বুঝতে পারেননি, হয়তো একদিন বুঝতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ যেন আমাদেরকে ইসলামের সমাধান মেনে নেওয়ার আর এতে আস্থা রেখে হেফাজতে থাকার তৌফিক দিন। আমরা যেন সাময়িক সুখ আর আবেগের কাছে এই দুনিয়া আর আখিরাতের যথার্থ প্রশান্তি নষ্ট না করি!